আসিফ আকবর
একজন পরিচিত সিনে সাংবাদিকের ওয়াল থেকে তথ্য পেলাম আমাদের নায়ক সাকিব খান আমেরিকায় স্থায়ী হবার জন্য অ্যাপ্লাই করেছেন। আমাদের ক্রিকেটের সেরা ব্র্যান্ড সাকিব আল হাসানের আমেরিকা ভিজিটের নমুনা দেখে মনে হচ্ছে সেও মাইন্ডসেট করেছে ওখানেই স্থায়ী হবার। এ বিষয়ে আগেও লিখেছি আবারও লিখছি। লুটেরা ব্যাংক ডাকাত আর টাকা পাচারকারীদের কথা আলাদা। সুযোগ পাওয়া মাত্রই আমাদের দেশের স্পোর্টস আর বিনোদন সেক্টরের সেলিব্রিটিগণ আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছেন ইওরোপ আমেরিকা কানাডা অষ্ট্রেলিয়ার মত সোশ্যালি সিকিওরড দেশগুলোতে। এই ধরনের মাইগ্রেশন নতুন কিছু নয়, এক পা দেয়া আছে দেশের বাইরেই। উদাহরনের চেয়ে দেশান্তরীর তালিকা আরো সমৃদ্ধ।
এই ইন্ডাস্ট্রীতে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি, বিক্ষুদ্ধ সময় এখনো পার করছি। কিছুটা কষ্ট পেলেও দেশ ছেড়ে চলে যাবার চিন্তা মাথায় এন্ট্রি পায়নি, প্রাপ্তিটাকেই ঐশ্বর্য ভেবেছি। সুযোগ আমারই ছিল সবচেয়ে বেশী, কারন আমি সবসময় দেশের বাইরে বৈধভাবে গিয়েছি কার্যাদেশ বা ওয়ার্ক পারমিট নিয়েই। যারা যাচ্ছেন তারা সবাই এই দেশে অবশ্যই অবস্থাপন্ন ছিলেন।
তারপরও কেন গেলেন !!! রাষ্ট্রের জনগনের সর্বোচ্চ ভালবাসা পাওয়া মানুষগুলো কেন চলে যাচ্ছেন !! আমার গোঁয়ার্তূমি এক জিনিষ, আর অন্য সবার বৈষয়িক ভাবনা সম্পূর্ন আলাদা। আমি কাউকে ব্লেইম করছিনা, নিজেও খুব দেশপ্রেম দেখানোর ভাবও নিতে চাচ্ছিনা। শেষ পর্যন্ত আটকে গেছি একটা অন্যরকম উদাহরনে, নাম লিওনেল মেসি। বার্সেলোনায় একটা মধুর জীবন কাটিয়েও শেষ পর্যন্ত তাকে চলে যেতে হয়েছে প্যারিসে। বার্সা আর মেসির মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত মূদ্রার এপিঠ ওপিঠ চরিত্রটার আসল রুপটা দেখা দিলো।
পেশাদারীত্বে নিজস্ব আবেগকে প্রশ্রয় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশী মানুষ হিসেবে আমরা আবার আবেগের বাইরে যেতেও পারবোনা। মেসির প্রতি বার্সার অবিচারটা পেশাদারী হলেও ওর চলে যাওয়ার ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু লেগেছে। মেসিভক্তরা কষ্ট পেয়েছে নিশ্চয়ই, তবে আমার মনে নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে।
প্রত্যেকটা মানুষ তার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। এদেশের সেলিব্রিটিরাও অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতেই মাইগ্রেটেড হচ্ছেন। আমার ছেলেরাও চলে যেতে চাচ্ছে, চলেও হয়তো যাবে। কি লাভ হলো এতদিন- সকল দেশের সেরা সে যে ( রানী) আমার জন্মভূমি গানটি গেয়ে !! হিসাব একটাই- সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা।
দেশের আসল পাখীরা দেশে আসছে শীতের পাখী হয়ে, আর শীতের দেশের পরিযায়ী পাখীরা মৌসুমে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এসে উপভোগ করছে এদেশের মৃদু শীতল আমেজটা।
আছি এই দেশেই, আমাকে পছন্দ হউক আর না হউক সহ্য করার অভ্যাস করে ফেলুন। যারা গেছেন যাচ্ছেন যাবেন তাদের অভিনন্দন। আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে লোকাল সিস্টেমের আনন্দ কষ্ট নিজের পরিনতি ভেবে সন্তুষ্টচিত্তে আমি আছি বাংলাদেশেই। এর বাইরে আর কোন কিছু ভাবতেই পারিনা।
জীবদ্দশায় হয়তো জানতেও পারবোনা অনেককিছুই, তবে নিশ্চিত - একদিন আমাকে নিয়েও গর্ব করবে এদেশের কিছু মানুষ। এটাই আত্মতৃপ্তি আমার…
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
সময় জার্নাল/এসএ