আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি বছর বিশ্বজুড়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ধরপাকড়ের শিকার হয়েছেন বহু সাংবাদিক। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানিয়েছে, ২০২১ সালে ২৪ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন এবং কারাগারে গেছেন ২৯৩ জন।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সিপিজে জানায়, বিশ্বের পেশাগত দায়িত্ব পালনে ২০২১ সালে এতো সংখ্যক সাংবাদিক জেলে যাওয়ার ঘটনা নতুন রেকর্ড।
জানা গেছে, ২০২১ সালে কারাবন্দি হয়েছেন ২৯৩ জন সাংবাদিক। সবচেয়ে বেশি এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে চীনে। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যা এবং কারাগারে যাওয়ার ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা বার্ষিক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনটি জানায়, ২০২০ সালে কারাবন্দি সাংবাদিকের সংখ্যা ছিল ২৮০ জন। চলতি বছর পোশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সারাবিশ্বে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ২৪ জন।
সিপিজের নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন বলেন, সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিকদের কারারুদ্ধ করা একটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের বৈশিষ্ট্য। তিনি আরও বলেন, এটি খুবই ভয়ংকর যে মিয়ানমার এবং ইথিওপিয়া নির্মমভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।
বর্তমানে চীনে ৫০ জন সাংবাদিককে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে বলে, ধারণা করা হচ্ছে। চীনের পরে অবস্থানে মিয়ানমার। গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর ২৬ জন সাংবাদিককে আটক করা হয়।
চীন ও মিয়ানমারের মতো মিশরেও ২৫ জন, ভিয়েতনামে ২৩ জন এবং ইউরোপের বেলারুশে বর্তমানে ১৯ জন সাংবাদিক বন্দি রয়েছেন। সাংবাদিকদের ধরপাকড়ের ঘটনায় তুরস্ক, ইরিত্রিয়া, সৌদি আরব এবং ইরান রয়েছে তালিকায়।
প্রথমবারের মতো সিপিজে হংকংয়ের অ্যাপল ডেইলি নিউজপেপার এর প্রতিষ্ঠাতা মিজি লাইকে অন্তর্ভুক্ত করে কারাবন্দি সাংবাদিকদের তালিকায়।
যে কোনো সরকারের সমালোচনার কারণেই এতোদিন সাংবাদিকদের জেলে যেতে হতো। এখন সাইবারক্রাইমের অভিযোগ আনা হচ্ছে তাদের কনটেন্ট অনলাইনে প্রকাশ করার জন্য।
সিপিজে জানিয়েছে, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ধরপাকড় করা হয়েছে ৫৬ জন সাংবাদিককে। যাদের মধ্যে অনেককে ধরা হয় বিক্ষোভ চলাকালে।
ভারতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন চারজন সাংবাদিক। অন্যদিকে, মেক্সিকোতে হত্যা করা হয় তিনজনকে। অপরদিকে, মেক্সিকোতে এখনও ছয় সাংবাদিককে হত্যার তদন্ত চলছে।
এর বাইরে, ১৮ জন সাংবাদিক মারা গেছেন, তাদের মৃত্যুর পেছনে তাদের পেশাগত কোনো ভূমিকা ছিল কিনা তা অস্পষ্ট।
সময় জার্নাল/এলআর