নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে মহিলা দল। মানববন্ধন শেষে সামনের প্রধান সড়কে মিছিল করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে পুলিশের সঙ্গে মহিলা দলের নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে মিছিলের চারপাশে ঘিরে রাখে পুলিশ।
এ সময় তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বেলা সাড়ে বারোটার দিকে মহিলা দলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শেষ করে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলে যান। এখন তারা সেখানে অবস্থান করছেন। এদিকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এর আগে সকাল দশটায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন শুরু হয়।
সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি এই অবিচার জনগণ মেনে নেবে না। জনগণ প্রস্তুত হচ্ছে, রাস্তায় রাস্তায় আপনার দুর্বৃত্তদের ব্যারিকেড করে আপনার ময়ূরের সিংহাসন রাস্তায় লুটিয়ে দেওয়ার জন্য।
আজকের মতো বসে আর বিক্ষোভ সমাবেশ হবে না জানিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা জানি আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করলে আমাদের বন্দি করা হবে, লাঠিপেটা করা হবে। কিন্তু সব বেষ্টনী, সব লৌহ শৃঙ্খল মহিলা দল ভেঙে তছনছ করে দেবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি মনে করেছেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কিছু হয়ে গেলে আপনি নিরাপদ। আপনার সামনে আর কোনো কাঁটা থাকলো না। কিন্তু আপনি যে অন্যায় অবিচার করেছেন, যে দুর্নীতি লুটপাটের মহাস্বর্গ রচনা করেছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম করেছেন, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ছাত্র-যুবকদেরকে মনে করবেন না যে আপনি নিরাপদে আছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) মতো নির্দয় এবং নিষ্ঠুর আচরণ দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কখনও করেননি। আপনি খালেদা জিয়াকে বন্দি করেছেন কি প্রক্রিয়ায়। আপনার মন্ত্রীরা বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায়। বাংলাদেশে কি আইনি প্রক্রিয়া আছে? সন্ত্রাসী, যুবলীগ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী, লক্ষ্মীপুরে অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলামকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের নামে অভিযোগ আছে। তাদের জেল খানায় ধুমধাম করে বিয়ে হয়। তারা মুক্ত হয়ে যায়। নাটোরের বিএনপি নেতা নূর হোসেন বাবুকে প্রকাশ্য দিবালোকে যারা হত্যা করেছে, রাষ্ট্রপতি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। যুবদলের নেতা গামাকে যারা হত্যা করেছে তাদের ক্ষমা করে দেন। এইতো হচ্ছে আইনি প্রক্রিয়া। জনগণ বলে এটা আইনি প্রক্রিয়া নয়। এটা হাসিনা প্রক্রিয়া। এই হাসিনা প্রক্রিয়ায় যদি কোনো জজ নিরপেক্ষ রায় দেয় তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, মহিলা দলের নেত্রী জেবা আমিন খান, হালিমা নেওয়াজ আর্লি, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আকতার, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
সময় জার্নাল/এলআর