প্রস্তাবিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে বেশকিছু পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
অনলাইনে কেনাকাটা: অনলাইনভিত্তিক পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তর সেবায় খরচ বাড়তে পারে। ভার্চুয়াল বিজনেস সেবার উপর ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ করার প্রস্তাব হয়েছে বাজেটে। এছাড়া নতুন বাজেটে ফেসবুক, গুগল ও ইউটিউবের মতো কোম্পানির বাংলাদেশে অর্জিত আয়ের উপর করারোপের আইনি বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার ওপর বর্তমানে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছেন অর্থমন্ত্রী। এতে এ খাতে ব্যয় বাড়বে।
তামাক, বিড়ি ও সিগারেট: তামাক পণ্য বিড়ি, সিগারেট, গুল ও জর্দার দাম বাড়তে পারে। সিগারেট ও বিড়ির কাগজের উপর সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। হাতে তৈরি বিড়ির খুচরা মূল্যহার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও এনার্জি ড্রিংকসের সম্পূরক শুল্ক ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করা হয়েছে।
আমদানি করা খাদ্যপণ্য: মধু, কোকোনাট, কাজু বাদাম, কাটবাদাম, আখরোটের উপর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কফি, গ্রিন টিয়ের উপর শূন্য থেকে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফিনিশড চকলেট, সুপার কনফেকশনারির সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে ৪৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যে দাম বাড়তে পারে।
আমদানিকৃত চাল: রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করায় সব ধরনের চাল আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ ও রেগুলেটরি শুল্ক ৩ শতাংশ প্রযোজ্য হবে। ফলে দাম বাড়তে পারে।
আমদানিকৃত মোবাইল ফোন সেট: অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় আমদানিকৃত মোবাইল ফোন সেটের ওপর শতকরা এক ভাগ সারচার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। ফলে এর দাম বাড়বে।
প্রসাধন সামগ্রী: বাজেটে প্রসাধন সামগ্রীতে ১০ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এছাড়া ছেলেদের শেভিং ক্রিম, আফটার শেভ, গোসলের সুগন্ধি উপকরণ, ওয়াশরুম ফ্রেশনারের মত পণ্যে বাড়তি ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব এসেছে।
প্লাস্টিক পণ্য: পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য সবধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের উপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সিরামিক ও বাথটাব: সিরামিক, বাথটাব, জ্যাকোজি ও শাওয়ার ট্রের উপর সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
ফার্নিচার: প্রস্তাবিত বাজেটে আসবাবপত্র উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়ে এক শতাংশ করে ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে দাম বাড়বে।
পোশাক: বর্তমানে নিজস্ব ব্র্যান্ড সংবলিত তৈরি পোশাক বিক্রিতে ৪ শতাংশ হারে ভ্যাট আছে। সরকার আগামী অর্থবছর থেকে এ খাতে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রস্তাব করেছে। এ ছাড়া ব্র্যান্ডবিহীন পোশাক পণ্য বিপণনের ক্ষেত্রেও একই হারে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ট্যারিফ ভ্যালু বাড়ছে অনেক পণ্যে: আসছে বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের ট্যারিফ ভ্যালু যৌক্তিকিকরণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এ তালিকায় রয়েছে- টমেটো পেস্ট, কেচাপ, সস, বিভিন্ন ফলের পাল্প, ফলের জুস, ব্যবহার অযোগ্য ট্রান্সফর্মার অয়েল, বিভিন্ন ধরনের পেপার ও পেপার প্রোডাক্ট, কটন ইয়ার্ন বর্জ্য, ওয়েস্ট ডেনিম, শিপ স্ক্র্যাপ, সিআর কয়েল, জিপি শিট, সিআই শিট, রঙিন সিআই শিট, ব্লেড, চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাস।
আমদানিতে অগ্রিম ভ্যাট বাড়ছে: আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম ভ্যাট ও ব্যবসায়ী পর্যায়ের ভ্যাট ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। আমদানিতে এর প্রভাব পড়তে পারে। বর্তমানে প্রায় ১১০০ ধরনের পণ্য আমদানি হয়, যেখানে ভ্যাট দিতে হয়।