বুধবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফার্স্ট লেডি ৬৮ বছর বয়সী ব্রিজিত মাখোঁর লিঙ্গপরিচয় নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে ফ্রান্সে। গত দুই দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত আসলে রূপান্তরকামী নারী। পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি।
আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর চার মাসও বাকি নেই। এমন সময় এ ধরণের গুজবে বিব্রত মাখোঁ সরকার। ব্রিজিত এই বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য একটি আইনি অভিযোগ দায়ের করতে চান। তার আইনজীবী জিন এননোচি এএফপিকে বলেছেন ‘তিনি প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এটি প্রক্রিয়াধীন আছে।’ তবে তিনি বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।
জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে প্রথম উগ্র ডানপন্থীদের একটি ওয়েবসাইটে ব্রিজিতের লিঙ্গপরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব আকারে ছড়িয়ে পড়ে। গুজব রটে, ব্রিজিত আসলে রূপান্তরকামী নারী। পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন। জন্মের সময় তার নাম ছিল জেন-মিশেল ত্রোগনেউক্স।
পেশায় শিক্ষক ব্রিজিতের বয়স এখন ৬৮ বছর। হাইস্কুলে ইমানুয়েল মাখোঁর শিক্ষক ছিলেন তিনি। ব্যক্তিজীবনে তিন সন্তানের জননী এই নারী। ব্রিজিতের মেয়ে লরেন্স এমানুয়েল মাখোঁর সহপাঠী। এরপরও বিবাহিত ব্রিজিতের প্রেমে পড়েন মাখোঁ। ব্রিজিত ২০০৬ সালে তার স্বামীকে ডিভোর্স দেন। পরের বছর বিয়ে করেন মাখোঁকে। ২০১৭ সালে মাখোঁ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হলে দেশটির ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব নেন ব্রিজিত।
ফরাসি পত্রিকা লিব রেশন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উগ্র ডানপন্থী একটি অনলাইন জার্নালে নাতাচা রে নামের এক নারী প্রথম ব্রিজিতের লৈঙ্গিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি লেখা লেখেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রিজিতের আইনজীবী জেন এন্নোচি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ফরাসি ফার্স্ট লেডির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়েছে। ষড়যন্ত্রমূলক এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্রিজিত। এমানুয়েল মাখোঁর বিরোধীরা, বিশেষত উগ্র ডানপন্থী, করোনার টিকাবিরোধী এবং যড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট থেকে এই গুজব ছড়ানো হয়েছে।
তবে এবারই প্রথম নন, এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলের শিকার হয়েছিলেন ব্রিজিত। স্বামীর চেয়ে বয়সে প্রায় ২৫ বছরের বড় হওয়ায় অনেকেই ব্রিজিতকে নিয়ে মজা করেছিলেন। আগামী বছর ফ্রান্সে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার ঘোষণা এখনো দেননি এমানুয়েল মাখোঁ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নির্বাচনে লড়বেন। তাই নির্বাচন সামনে রেখে ব্রিজিতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন বিরোধীরা। সূত্র: বিবিসি।
এমআই