সময় জার্নাল প্রতিবেদক : অনেকেই আবাসন খাতে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছে এমন অনেক ঘটনা আছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, 'টাকা পয়সা দিয়ে প্রতারণার ঘটনার কথা শুনি। এমনটা যেন না হয় এই বিষয়ে রিহ্যাবকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ একজন মানুষ নিজের জায়গা সম্পত্তি বিক্রি করেও স্বপ্ন পূরণের জন্য টাকা জমা দেয়। রিহ্যাব যেন কারো দীর্ঘশ্বাসের কারণ না হয়।'
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রিহ্যাবের ৫ দিনব্যাপী আবাসন মেলার উদ্বোধনকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের চেয়ারম্যান এবিএম আমিন উল্লা নূরী এবং এফবিসিসিআইএর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ) এবং মেলা কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রথম) ও মেলা আয়োজক কমিটির কো-চেয়ারম্যান কামাল মাহমুদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইনতেখাবুল হামিদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সবার স্বপ্ন থাকে একটা বাড়ি বা প্লটের। বেশিরভাগ মানুষের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে রিহ্যাব। সংগঠনটি দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ড্যাপের যে বিষয়গুলো চিন্তা করছেন সেটা হলে সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিষয়গুলো নিয়ে নিশ্চয়ই চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এই সংক্রান্ত কমিটি অত্যন্ত বিচক্ষণ, তাই আপনারা চিন্তিত হবেন না। ঢাকাকে চাপ মুক্ত করতে হবে। অনেক কাজ সবাই মিলে করতে হবে।
অনেকেই আবাসন খাতে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছে এমন অনেক ঘটনা আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টাকা পয়সা দিয়ে প্রতারণার ঘটনার কথা শুনি। এমনটা যেন না হয় এই বিষয়ে রিহ্যাবকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ একজন মানুষ নিজের জায়গা সম্পত্তি বিক্রি করেও স্বপ্ন পূরণের জন্য টাকা জমা দেয়।
অনুষ্ঠানে রিহ্যাব নেতারা বলেন, রিহ্যাব সরকারের রাজস্ব আয় প্রদান, কর্মসংস্থান তৈরি, রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ ২৬৯ প্রকার লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে সমগ্র নির্মাণ খাতে ও জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সমগ্র নির্মাণ খাতের অবদান প্রায় ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশের আবাসন শিল্প শুধু আবাসনই সরবরাহ করছে না, একই সঙ্গে ৪০ লাখ শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল দুই কোটি লোকের খাদ্য নিরাপত্তা দিচ্ছে।
মেলায় শুধু ফ্ল্যাট-প্লটই নয়, এক সঙ্গে গৃহঋণ এবং বাড়ি তৈরির নানা উপকরণও যাচাই করতে পারবেন ক্রেতারা। এই বছর ক্রেতারা যে দামে ফ্ল্যাট পাবেন, নানাবিধ কারণে আগামীতে তা পাবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে এমন দাবি করে রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) বলেন, করোনায় বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছিল আবাসন শিল্প। কিন্তু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রণোদনা প্রদানের সিদ্ধান্তে এই খাত সংকট থেকে রক্ষা পায়। যে অর্থ দেশের বাইরে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল, সেই অর্থ এই দেশে করোনার সময় আবাসন খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি এবং প্রস্তাবিত ড্যাপের কারণে আমরা শঙ্কিত।
এবারের মেলায় ২২০টি স্টল থাকবে। এরমধ্যে দুটি ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন, ছয়টি গোল্ড স্পন্সর, ২২টি কো-স্পন্সর, ১৫টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩টি অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ক্রেতা দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবে।
সময় জার্নাল/এসএ