নিজস্ব প্রতিনিধি: কোনো দেশ একা একা চলতে পারে না। বিচ্ছিন্নভাবে উন্নতি করতে পারে না। কোভিড-১৯ মহামারি সবাইকে শিখিয়েছে যে, প্রতিটি দেশ পরস্পর নির্ভরশীল। উন্নত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বিশ্বের স্বার্থে সব দেশকে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে হবে।
মালদ্বীপের জাতীয় সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় দেশটির সরকারি ও বেসরকারি খাতকে পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেছেন।
বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, আমি আশা করি আমাদের (বাংলাদেশ-মালদ্বীপ) উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুসংহত হবে। বাংলাদেশ সম্ভাবনা ও সমৃদ্ধি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমি মালদ্বীপের সরকারি-বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুবিধার জন্য আগামী ৫০ বছরে উন্নয়ন যাত্রায় আমাদের অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানাই।
‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশীদের সাথে সহযোগিতার নীতিগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি, যেমনটি আমাদের জাতির পিতা বলে গেছেন’- বলেন তিনি।
এর আগে মালদ্বীপের জাতীয় সংসদ ‘পিপলস মজলিস’ এ শেখ হাসিনাকে সেদেশের স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদ ও ডেপুটি স্পিকার স্বাগত জানান। পরে প্রধানমন্ত্রী দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন এবং মালদ্বীপের সংসদের স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদ তার বক্তৃতায় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশের নেতৃত্ব দেওয়ায় শেখ হাসিনার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ইস্যুগুলোতে সম্মত করাতে শেখ হাসিনাকে পাঁচ চুক্তি প্রণেতার অন্যতম হিসেবে বিবিসি রিপোর্টের কথাও উল্লেখ করেন মোহাম্মদ নাশিদ। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে একটি নৌকার চিত্র শিল্পকর্ম উপহার দেন।
সংসদে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনা আরও বলেন, মালদ্বীপের উন্নয়নের যাত্রা, এলডিসি থেকে মধ্যম আয়ের দেশে সফল উত্তরণ প্রত্যক্ষ করে আমরা বিশেষভাবে উৎসাহিত হয়েছি। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ পরিপূরকতাগুলোকে কাজে লাগাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়ন যাত্রার ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবার পর এখন লক্ষ্য হচ্ছে- ২০৩১ সালের মধ্যে এসডিজির সব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশে পরিণত করা এবং ২১০০ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ এবং স্থিতিস্থাপক ডেল্টায় পরিণত করা।
মালদ্বীপের সংসদে দেওয়া ওই ভাষণে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আপনারা হয়তো অবগত আছেন যে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে ২৪ নভেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশের এলডিসি বিভাগ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এবং বিশ্বের ৩৪টি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে স্থান করে নিয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে একটি প্রযুক্তি-চালিত সমাজ ও উদ্ভাবন-নেতৃত্বাধীন প্রবৃদ্ধিতে রূপান্তরিত করতে তার সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
সময় জার্নাল/এলআর