শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

গোয়াল গ্রাম গণহত্যার পঞ্চাশ বছর, রক্ষা পায়নি শিশুরাও

শুক্রবার, মার্চ ২৬, ২০২১
গোয়াল গ্রাম গণহত্যার পঞ্চাশ বছর, রক্ষা পায়নি শিশুরাও

ইমাম মেহেদী* 

১৯৭১ সাল পাকিস্তানি বাহিনী স্বাধীনতা বিরোধীরা এদেশের সাধারণ মানুষের উপর খুন, ধর্ষণ, র্নিযাতন চালিয়ে যাচ্ছে আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে অসংখ্য বসতভিটা কোথাও কোথাও আগুণের মধ্যেই নিক্ষেপ করে হত্যা করা হচ্ছে বাঙালিদের তেমনি একটি ভয়ংকর রাত একাত্তরের ০৬ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বৃহৎ দল রাতে অবস্থান করছিলো কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার গোয়ালগ্রামের ফরাজী বাড়িতে তখন বর্ষা মৌসুম চারিদিকে পানি গোয়ালগ্রামের দক্ষিণ পশ্চিমে দিকে মাথাভাঙা নদী পূর্ব উত্তরেও ডোবা এলাকা নদী পার হয়ে এখানে সহজেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আসতে পারবে না এমনিটি বিশ^াস ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের কিন্তুু এই গোপন সংবাদ পৌঁছে যায় মাথাভাঙা নদীর ওপারে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে

 

রাত একটা থেকে তিনটার মধ্যে স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নৌকা যোগে মাথাভাঙা নদী পার হয়ে প্রবশে করে গোয়ালগ্রামে ফরাজি বাড়িতে ঢুকে বোমা নিক্ষেপ, গুলি বর্ষণ ব্রাশ ফায়ার করতে থাকে ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের উপর এই সময় ঘুমন্ত মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত সংগটিত হয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্ঠা করে কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী তিনদিকে থেকে ঘিরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মুক্তিযোদ্ধারা এক পর্যায়ে পিছুঁ হটে এই সুযোগে হানাদার বহিনীরা গুলি করে হত্যা করে নারী, পুরষ, শিশু বয়স্ক ১৩ জন সাধারণ নিরীহ মানুষকে এসময় পাল্টা প্রতিরোধ করতে গিয়ে শহীদ হয় তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ওই কালো রাতে মোট ১৬ জনকে হত্যা হত্যা করেছিলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শুধু গুলি করে হত্যা করেই খান্ত হয়নি হানাদার বাহিনী বোমাও নিক্ষেপ করেছিলো আগুনে জালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিলো অনেক বাড়ি ঘর ওই রাতের গণহত্যায় আহত আহত হন ১৮ মাসের শিশু মনিরুল ইসলাম বছরের শিশু রহিতোন নেছা হত্যাকান্ড ঘটিয়ে পাকিস্তানিহানাদার বাহিনী পুনরায় নৌকা যোগে মাথাভাঙা নদী পার হয়ে আবার ফিরে যায় তাদের কাম্পে

   

প্রত্যক্ষদর্শী, ভূক্তভোগী শহীদ পরিবারের সদস্যদের বর্ণণা থেকে জানা যায়, ০৬ সেপ্টেম্বর ভোরে সকালে তারা দেখতে পান, বাড়ির ভিতরে, বাড়ির আশে পাশে রক্তের জমাটবাধা অবস্থায় লাশ আর লাশ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীদের এই হত্যাকান্ডের পর এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরে বেশিরভাগ মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় সকালে এলাকার কিছু মানুষ একত্রে হয়ে লাশ গুলোর কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তবে সবগুলি লাশ একসাথে একই স্থানে কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি মাত্র দুটি লাশের জানাযা দাফন কাফন করতে পেরেছিলো স্থানীয়রা এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরলে আবার সবাই গ্রাম থেকে পালিয়ে যায়  

 

গ্রামে মোট চারটি বংশের লোকজন বসবাস করতো গ্রামটি মাথাভাঙ্গা নদীর তীরবর্তী অনেকটাই প্রত্যন্ত অঞ্চল গণহত্যায় গ্রামের চারটি বংশের মধ্যে তিনটি বংশেরই উপর এই গণহত্যা এবং অগ্নিসংযোগ চালিয়েছিলো হানাদার বাহিনী যে বাড়িতে গণহত্যা ঘটেছিলো ওই বাড়িটি ছিলো আজাহার আলী ফরাজির আজাহার আলী ফরাজীর ছেলে শহীদ তফিল উদ্দিন ফরাজি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা স্থানীয় সংগঠক তিনি এলাকায় সচেতন স্বজ¦ এবং স্বাধীনতাকামী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন

 

প্রত্যক্ষদর্শী ভূক্তভোগী এবং শহীদ পরিবারের সাথে কথা বলে এই গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ জানা যায়, গোয়ালগ্রামে মোট চারটি বংশের লোক মিলে মিশে একাত্তর সালে বাস করতো কয়েকঘর হিন্দদেরও বসবাস ছিলো কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, গণহত্যা এবং সংগঠিত যুদ্ধে তিনটি বংশের লোক মারা গেলেও একটি বংশের কোন লোককে হত্যা করেনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অন্যদিকে এই গ্রামে যে মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং এখান থেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন এটাও পাকিস্তানি বাহিনীরা জানতো না মিরপুর উপজেলার আমলাসহ আশপাশের কিছু রাজাকার এবং গ্রামের জনৈক ব্যক্তির সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই গ্রামে প্রবেশ করেছিলো কারণ অচেনা নদীপথে নৌকা যোগে এখানে সাধারণত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা আসতে পারবে না বলে বিশ^াস করতেন এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সাধারণ মানুষ

 

অন্যদিকে আরো জানা যায়, সেপ্টেম্বর গোয়াল গ্রামের এই যুদ্ধ গণহত্যার আগে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে একটি যুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিলো মাথাভাঙা নাদীর ওপারে রামনগর ভবানীপুরে সেই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হয়েছিলো যার ফলশ্রুতিতে তারা এই গণহত্যা চালিয়েছিলো

 

       


শহিদ সনাক্তকরণ পরিচয়

গোয়ালগ্রামে ওই রাতে শহীদ হয় ১৬ জন এর মধ্যে গণহত্যায় শহীদ হয় ১৩ জন সাধারণ নারী, পুরুষ, শিশু ওই সময়ই পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যুদ্ধে শহীদ হন তিনজন মুক্তিযোদ্ধা তিনজনের মধ্যে একজন ওই ফরাজী বাড়ির সন্তান অন্য দুইজনের মধ্যে একজনের বাড়ি পাবনা জেলায় অন্য জনের বাড়ি রাজবাড়ী জেলায় কিন্তু তাদের পারিবারিক পরিচয় পাওয়া যায়নি মোট ১৬ জন শহীদের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে একই গ্রামের তিন পরিবারের ১৪ জন পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে আহত হয় দুজন শিশু

 

গোয়ালগ্রাম গণহত্যায় নিহতদের নাম পরিচয়

ক্রমিকÑনাম Ñবয়স Ñপিতা/স্বামী   

 

০১তফিল উদ্দিন ফরাজী (২৮)Ñমৃত.আজাহার আলী ফরাজী       

০২ওয়াজে আলী মিয়া-অজ্ঞাত (পাবনা)  

০৩আব্দুল মমিন-অজ্ঞাত (রাজবাড়ী)    

০৪নিয়াতন নেছা (২৫)Ñতফিল উদ্দিন ফরাজী 

০৫. মালতী খাতুন (৮)Ñতফিল উদ্দিন ফরাজী    

০৬শহীদা খাতুন (৫)Ñতফিল উদ্দিন ফরাজী     

০৭সালেহার বেগম (৪৫ Ñমহত আলী      

০৮আহাতন নেছা (৪০)Ñগোলবার আলী 

০৯জিন্নাত আলী (১৫)Ñরহমত আলী     

১০রব্বান আলী (৩০)-আদালত মন্ডল 

১১আদালত মন্ডল (৭৫)Ñকালাচাঁদ মন্ডল

১২সিরাজুল ইসলাম (১৫)Ñকোকিল উদ্দিন শাহ  

১৩পচা শাহ (১৮) Ñমালেক উদ্দিন শাহ  

১৪কাইমদ্দিন শাহ (৫৫)Ñমৃত. কালাচাঁদ শাহ    

১৫. আমেনা বেগম (৪৫ Ñমৃত. কালাচাঁদ শাহ      

১৬জাহেরা বেগম (২২ Ñসানাউল্লাহ শাহ   

 

গণহত্যায় আহত দুই শিশুর পরিচয়

০১মনিরুল ইসলামÑপিতা-তফিল উদ্দিন ফরাজী (১৮ মাস) শিশু

০২মোছা. রহিতন নেছা- স্বামী-মো. রেজাউল হক ( বছর) শিশু   



শহীদ পরিবার, ভুক্ততভোগী প্রত্যক্ষদর্শীর মৌখিক ভাষ্য


মনিরুল ইসলাম (৫১)

পিতা- শহীদ তফিল উদ্দিন ফরাজী

পেশাকৃষি

ঠিকানা : ফরাজিবাড়ি, গোয়ালগ্রাম,

ইউনিয়ন : বোয়ালিয়া, উপজেলা : দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

  

রাতে আমাদের বাড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনা আমি বড় হয়ে আমি আমার খালা, চাচা, আত্মীয়স্বজন আশপাশের মানুষের কাছ থেকে জানতে পেরেছি বাড়ির ভিতর আর ঘরে রক্ত আর আগুনের গন্ধ ছিলো আমার বয়স তখন ১৮ মাস পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমন করলে আমার খালা আমাকে কোলে করে ঘরের মেঝোতে বসে ছিলো আমি শিশু হলেও রক্ষা পায়নি দোসরদের হাত থেকে আমার শরীরে চারটি গুলি লেগেছিলো আমার খালার বয়ষ ছিলো নয় বছর তার হাতে গুলি লেগেছিলো তিনি এখনও পঙ্গু হাত নিয়ে বেঁেচ আছেন আমি একাত্তরের হানাদার বাহিনীর গুলিতে আহত যুদ্ধ শিশু ওই রাতে আমি আমার পরিবারের জনকে হারিয়েছি

 

 

মোছা. রহিতন নেছা (৫৮)

স্বামী-মো. রেজাউল হক

পেশা : গৃহিনী

ঠিকানা : ফরাজিবাড়ি, গোয়ালগ্রাম,

ইউনিয়ন : বোয়ালিয়া, উপজেলা : দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

 

যখন পাঞ্জাব আইছে, তখন ধরো আমরা ছোট মানুষ, ঘুমি আছি আমার বয়স তখন নয় বছর তারপর এই জাল্লা (জানালা) দিয়ে শো শো গুলি হচ্ছে আমার মা, বোন সব বসে আছে, তারপর পালি (পালিয়ে) গেছে, আমি জানতে পারিনি তারপর উঠে আমি দরজার দিকে চলে যাচ্ছি, তখন আমার হাত ধরে বসাইছে তখন আমি বুলছি কি হয়ছে বুবু, তখন বুলছে যে গুলি করছে তখন আমি বলছি, ভাই কই, বু তখন বুলছে কি জানি তখন মনে হচ্ছে বুবু যেন হার্টফেল (স্ট্রোক) কইরে মরি যাচ্ছে তারপরে ঘরে থাকতে নাগনু (লাগলাম) গুলি হয়েই যাচ্ছে তারপর দরজা বাড়েতে (আঘাত) লাগলো বাড়েতে বাড়েতে, বুবু তখন বুলছে, দরজা খসিয়েদে (খুলে দেওয়া) এই যে দরজা খসি দিছে আর গুলি, ঘরে একশো গুলি করতি নাগনু তহন, আমার মা, আমার বোনের দুটি মেয়ে এই ছুটে বেড়াচ্ছে ছেলে কোলে কইরে নিয়ে আর আমার বুবু ওই দরজার গোরেই (আড়ালে) বসে থাকলো আমার নাগলো সেখুন (গুলি লাগলো), আমার মারেও নাগলো (গুলি লাগলো), বুবু ওখানে বসেই থাকলো থাকার পর, ঘরের দরজা মাইরে (বন্ধ) দিলো আমা দুইজনারা নাগার পর দরজা মারদি (বন্ধ করে) দিলো তহন আমি কানছি (কাঁদছি) আমার বুবু বুলছে কান্দিসনে (কান্না), কান্দলি আবার মাইরবে তা আমি আর কান্দি নি কো আমার পিঠে হাত বুলাচ্ছে আমার এই হাত (বাম হাত) নাই কো তখন আবার ঘর দুমদাম করে বাইরেচ্ছে ঘর যদি না খসাই (খোলে) ঘরে আগুণ ধরায়ে দিবো তাই বুলছে ক্যাম্মা যেন কথা কইচ্ছে পাঞ্জাবিরা ঘরের ইট ভাঙি (ভেঙে) গায়ে পরছে আমি বুলছি বু, কি পরছে বুবু বুলছে, গুলি করছে তারপর আবারো ঘর খসি দিলো তখন ঘরের ভিতর ঢুকে পাঞ্জাবিরা আমার মাকে একবার মারছে, আমার বোনকে একবার মারছে মা জানি দেয়ালের সাথে ছুটি বেড়াচ্ছে তহন মাকে গুলি করলো আমার বোন তখন, জোর হাত করছে, তোমরা আমার ধর্মের বাপ, তোমরা আমার ধর্মের ভাই, আমাকে মাইরো না তাও মাইরছে (গুলি) বুবুকে মাইরে ঘরের ভিতর উঠে পড়লো পাঞ্জাবি ঘরে ঢুকি ঘরের উপরে সব খুঁজছে লেপকেথা, বালিশ সব ফেলে দিচ্ছে তখন সব মইরি (মারা) গেছে তখন আমি উঠে দাড়ালাম তখন একজন পাঞ্জাব বুলছে, এই আরেকটা গুলি নাই তখন আমার ভয় নাগছিলো তখন আরেকজন বললো এই বাইরে আয়, মারতি হবে না তখন খিজল (মনিরুল ইসলাম) খালি কানছে তখন খিজলকে কোলে কইরে নিয়ে চলে গেলো পাঞ্জাবিরা নিয়ে যাওয়ার পর বাগান, বাড়ির মদ্যি (মধ্যে) ঘুরে ঘুরে আবার দরজার সামনি থুয়ে (রেখে) গেলো

 

আবারো কানছে খিজল, ওতো দুধ খায় ছোট, দেড়বছর বয়স তারপর চলিই গ্যালো তারপর আমরা কানছি আমার বোনের মেয়েরার সব হাতে নাগিছে, পেটে নাগিছে, আর ছোটডা মইরেই গ্যাছে আমার মার সাথে মইরে গ্যাছে ওরা আমার মা দাপিয়ে পানি খাওয়ার নাগি ছুটি বেড়ায়ে, ছোনছে (ঘরের বারান্দার কর্ণার) নামলো, পানি চাইলো, ঘরের দরজায় আসে মরি (মারা) গ্যালো বুবু কিছু  বোলেনি কো ওই ধরো জোর হাত করার সাথে সাথে মইরে গ্যাছে

 

আমার বুনের মেয়েডা বুলছে, খালাগো, মা তাই মরি গ্যাছে মায়ের মাথায় পানি ঢালি, মা তাজা হবিনি আমি বুলছি তাজা আর হবি না, তাই বুলে আমিও কান্দি ফ্যালাইছি আমার দুজনা তখন বুলছে, আব্বা কোথায় আছে, দেখপো তারপর যায়ি দেখছি, ওই ঘরে দেখছি, আমার সেই বুনাই (দুলাভাই) মরে পইরে আছে চকির তলে কোনায় (কর্ণারে) তবন (লুঙ্গি) উল্টি পরে আছে গায়ে সব তামা আর দরজায় মুক্তিফোজ পইরে আছে ঘরে আগুণ সব ¦লছে

 

আমার বুনের মেয়েডা বুলছে, খালাগো আব্বাকে মাইরে ফ্যালছে, দাদিকে ডাকি আনি যায়ে দেখছে যে, সুবরার আব্বাকে আমাগো পিলারে বান্দে থোইছে, মাইরে ফ্যালছে আর দাদীরে ঘরে সব আগুণ ধরি দিছে তাই দেখে ভয়ে পালিয়ে আসছে পালিয়ে আসার পর বুলছে, খালা বাড়ি চল পানি খাবো তাই বলে ধরো, ছাকামদ্দির বাপ ছিলো আমরা দাদা বুলতাম যায়ে বুলছি যে, দাদা পানি খাবো উঠোনে যায়ে আর যতি পারছি নে তারপর দাদা বুলছে উঠে আয় আমি ধরি তুলে নিই তারপর ওখেনে বড় বালতিতে পানি ছিলো একবালতি পানি, খানু সে, খাচ্ছে আর তুলছে (হাই) তুলতি তুলতি মইরি গ্যালো তহন মইরি গ্যালো আমার সেই বোনের মেয়েটা আর এখানে ঘরে চারজনে মইরে গেছে পানি চাইলো, আমি যে আর দিতি পারছি নে, আমি উঠতিই পাচ্ছিনে হাতে তো গুলি লাগা তারপর আমার হাতের অবস্থা তো খারাপ পরেরদিন, সবাইকে মাটি দিছে আমার বোন আর বোনের মেয়েকে এক কবরে মাটি দিছে, মাকে আরেক জায়গায় দিছে মোট চার জায়গায় মাটি হয়ছে চাপা মাটি হয়ছে

 

 

মো. আসমত আলী (৬৪)

পিতা-মৃত. আজাহার আলী ফরাজি     

মাতা-মৃত. মমেজান নেছা

পেশাকৃষি

ঠিকানা : ফরাজিবাড়ি, গোয়ালগ্রাম,

ইউনিয়ন : বোয়ালিয়া, উপজেলা : দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

 

তখন আমার বয়স পনের বছর আমি শুয়ে ছিলাম ওই সময় চেতন আছি ওই সময় দেখি যে, বাহাদুর শাহ নামে একজন লোককে সাথে করে একজন মেজর এসে আমার ভাইয়ের ঘরে সামনে এসে দাড়িয়ে পড়লো আমার ভাইকে বললো কে হ্যায় আমার ভাই বললো তোর বাপ হ্যায় বলেই গুলি শুরু হয়ে গেলো আমার ভাই ছিলো মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়ের গুলিতে মেজর ওখানেই মারা গেলো তারপর শুরু হলো সো সো করে গুলি আর গুলি মুক্তিযোদ্ধারা তো ঘরে ঘুমিয়ে ছিলো তারা ঘুম থেকে উঠে পালাতে লাগলো যে যেভাবে পারে আমরাও ওর ভিতরেই পালিয়ে গেলাম অনেক সময় ধরে চিৎকার, চেচামেচি, কান্নাকাটি, গুলির শব্দ চললো পরে চারিদিক থেকে গুলি বন্ধ হলে ফিরে এসে দেখি আমার ভাইয়ের দেড় বছরের শিশু (খিজল) আমার এই ছেলেটা রক্ততে ঢাকা সারা শরীর তারপর ছেলেকে নিয়ে এসে আমার মার কাছে রেখে গেলাম পরে তো দেখলাম আমার পরিবারের ভাই, ভাবি, ভাইয়ের মেয়ে সবাইকে গুলি করে হত্যা করেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাড়িতে একজন কাজের মহিলা ছিলো তাকেও হত্যা করেছে

 

পরে আমিআমি আমার ভাই ভাবিকে কবরে নামালাম আমরা তিনজনই ছিলাম আর কেউ না আমাদের পাশের গ্রামের নাটনাপড়ার মোছাব্বের আর নিয়ামত দুইজন ছিলো শুধু কোন গোসল, জানায়া, দাফন কাফন নেইযেভাবে যে কাপড়ে ছিলো ওইভাবেই ওরা মাটি খুড়লো আমি নিজ হাতে নামালাম তারপর আমরা আমাদের গ্রামেরই জব্বার হাজির ছাদের তলে আমরা থাকলাম সকাল বেলা উঠে আমি আমার আব্বা, মা আর এই ছেলেকে নিয়ে ছেলেকে নিয়ে ভারতের কাদিরপুর হয়ে বরমপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলাম পরদিন আমাকে আমার বাবা আমাকে পাঠিয়ে দিলো পরে সপ্তাহখানেক পর আমার বাবা সংবাদ দিলে ভাবির বোনকে বরমপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলাম চিকিৎসার জন্য

 


মো. আকবর আলী (৬২)

পিতা-শহীদ কাইমদ্দিন শাহ       

মাতা-শহীদ আমেনা বেগম

পেশাকৃষি

ঠিকানা : গোয়ালগ্রাম, ইউনিয়ন : বোয়ালিয়া,

উপজেলা : দৌলতপুর, কুষ্টিয়া


আমি বাড়িতেই ছিলাম তখন আমার ১৩ বছর বয়স আমাদের সাজি গ্রুপের ভিতর এক গ্রুপ মুক্তিফোজ থাকতো আর ফরাজী বাড়িতে থাকতো পাঞ্জাবিরা ওই রাতে আইসে ওদের গুষ্ঠির (ফরাজী বাড়ির) পুরা বাড়ি ঘিরেছিলো আমাদের বাড়ির পুরা এড়িয়া সব ঘিরিছিলো (চারিদিক থেকে ঘিরেফেলা) ঘিরার পর ফায়ার দিতি নাগলো ফায়ার দিতি নাগলিযে ধরেন যে যার মত পালিয়ে যাতি নাগলো যে যার মত মরিয়েছে মরিছে আমাদের বাড়ি থেকে আমার বাবা আর মা একই সাথে ওখানে মইরে পরে ছিলো আর অন্য অন্য দুডো চাচাতো ভাই, আমার বড় আব্বার এক ছেলে, মেঝো আব্বার এক ছেলে, আমার বড় চাচার এক বেটার বউ, মোট পাঁচজনকে আমাদের বাড়ির ভিতর হত্যা করেছিলো পাকিস্তানিরা সবাই পাকিস্তানিদের গুলিতে মারা গেছিলো

 

আমার বাপ আর মা ওঠোনে পরেছিলো আমি ছেলে মানুষ, তখন বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে গেছিলাম তারপর বেলা হলে দেখলাম যে সব, আমার দুই ভাই মরেছে ভাবি মরেছে তারপর এই ছেলের বাবা মাসহ একই বাড়িতে আটনয়জন মরে ছিলো তারপর আদালত মন্ডল, রব্বান ওরা সব মরে ছিলো পরে বেলা হলি আমরা সব ছেলে মানুষ তো, ওইসব দেখে বেড়ায়ছি তারপর যখন মাটি হয় তখন অন্য অন্য সব এসে মাটি দিছিলো আমার বাবা মা দের চর গোয়াল গ্রামের তে কয়েকজন এসে সব মাটি দিয়েছিলো

 


রোকেয়া বেগম (৭৮)

স্বামী- শহীদ রব্বান মন্ডল

পেশাগৃহিনী

ঠিকানা : গোয়ালগ্রাম, ইউনিয়ন : বোয়ালিয়া,

উপজেলা : দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

  

আমার বয়স তখন তিরিশ বছর হবে আমি বাড়িতেই ছিনু যখন তফিলের বাড়িতে গোলাগুলি হয় তখন আমার বাড়িয়ালা (স্বামী) বললো যে, আমরা সব বাড়িই (পালিয়ে) যাই বাতাবন্দি করে চারিদিকে ঘিরে নিছে আর গুলি বাপ, গুলি আসে নাগতি (গায়ে লাগা) নাগলো (লাগলো) আমার ^শুর পায়খানায় গিছলো পায়খানায় যাওয়ার পর আমার ^শুড়ের গুলি নাগলো গুলি নাগার পর আমার শাশুড়ি ডাকলো নাম ধরে ডাকলো যে বাবা দেখোদিনি কি হলো ডাকার পর আমার বাড়িয়ালা ঘর থেকে নামে আসলো নামে আসার পর, আমি মনে করো সাথে সাথে আসলাম তারপর ধরো আমার বাড়িয়ালা ঘরের মধ্যে লুকিয়ে থাকলো আমার ছেলে মেয়ে আছে, আমার ছোট ভাই আছে তাড়া সব ঘরের মদ্যে (মধ্যে) তখন ধরো যে পাঞ্জাব বাড়ির মধ্যে ঢুকলো ঢোকার পর ধরো, আমার বাড়ির ভিতর থেকে আমি আসছি আসার পর, আমাক বললো যে, দাঁড়া আমার কোলে পুটলা আর দেড় বছরের ছেলে ছিলো কোলে সেই পুটলা, আর ছেলে ওখেনে (ওইখানে) থুয়ে হেঁটে আমি পালিয়ে গেনু বাপ পালিযে যাওয়ার পর বাপ, বাড়ির মধ্যি যখন ফায়ারিং করতি নাগলো বাড়ির মদ্যি টিনির ঘর, ঘর ঝন ঝন করতি নাগলো তখন আমার বাড়িয়ালার কাছে গিয়ে তারা ঘিরে নিলো আমার বাড়িয়ালা তখন বুলছে যে, আলহামদু সূরা পড়ো তাহলে তারা মারবে না, ঘরের ভিতর আসবে না বলার পর আমার বাড়িয়ালাকে আমার ছেলে দিতে গেলাম কিন্তু বাড়িয়ালা বললো ছেলে আমি রাখবো না এরপর আমি ছেলে নিয়ে হেঁটে গেলাম বাড়িয়ালাকে গায়ে চাদর ছিলো, বৃষ্টি হয়ছে চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে বের করে নিয়ে আসলাম তারপর খিজলের (ফরাজী) বাড়ির ভিতর মহিষের খাবড়ানির ভিতর তাকে হত্যা করে পাঞ্জাবরা তারপর আমার ছেলেপেলে নিয়ে আমি তখন ডোবার ভিতর নেমে গেলাম তখন দেখি মেলা মুক্তিফোজ পানির ভিতর মাথা বাইর করে বইসে আছে তারপর আমি ডাকছি যে, তুমি পানির মদ্যে মাথা উচু করে বসে আছো তে, আমি কি কইরে যাবো কিন্তু তারা কোন কথা বলেও না, কিচুও করে না তারপর আমি ছেলে নিয়ে আমার এই পাশে হেরেজ জদ্দার নাম, সেই লোক আমারে ইশারা দিয়ে ডাক দিলো তারপর আমি চলে আসলাম চলে আসার পর এখানে একটা ঘোনা আছে তারা ধরো রাইফেল কাধের উপর ফিট করে আছে থাকার পর আমার ^শুরকে ধরো পানির ভিতর গুলি করে মাইরে দিলো আমার ^শুড়ের মাথায় নাগলো গায়ে চাদর ছিলো ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভিজে গেলো তখন বাবা, ওই অবস্থায় গ্রামের কয়েকজন মানুষ আমাকে হাতাশিং করে নিয়ে গেলো, তারপর আমি পালিয়ে গেলাম

 

তারপর সকালবেলা আমি ফিরে আসলাম ফিরে আইসে দেখছি সবই মরা খবরাখবরি হয়ে গেলো সব মইরে গেছে আমার স্বামীকে ^শুড়কে আগে ধোয়ালো ধোয়ানোর সময় কাত করলো গুলি মারছিলো পাজরে সেই জায়গা দিয়ে রক্ত পড়লো রক্তবাড়ানের পর ধুয়ে নিয়ে এসে আমার ^শুড়কে বাড়ির ভিতর নিয়ে এসে মাটি দিলো আমার আব্বা সব মাটিটাটি দিলো কবর খুড়তে খুড়তে আবার সব বললো যে, মাটি দিতে দেবে না, আবার খবর আইলো যে, পাঞ্জাবরা আসতেছে তারপর কোমনে কি সব নিয়ে গেলো বাপ

 

তারপর আমাকে আমার আব্বা নিয়ে গেলো আমার ^শুড় স্বামী মারা গেলো চোখের সামনে আমার মত দুঃখি আর কেউ নেই বাপ আমার বুলতে গেলে বেটা আমার বুকের মদ্যি (মধ্যে) ফাইটে যাচ্ছে বাপ স্বামীর ভিটে পযর্ন্ত পাইনি বাপরে ভিটেইতে আছি আমার চেয়ে দুঃখ বুঝি আর কারো নাই 

 


মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪০)

পিতা- বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন

মাতা- মোছা. রওশন আরা বেগম

পেশা : শিক্ষকতা

গ্রাম : গোয়ালগ্রাম, ইউনিয়ন : বোয়ালিয়া,

উপজেলা : দৌলতপুর, জেলা : কুষ্টিয়া

 

 

মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরে আমার জন্ম আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিন্তু গল্প শুনেছি আমার বাবা  আত্মীয় স্বজন এবং আশপাশের মানুষের কাছ থেকে শুনেছি সেপ্টেম্বর সেই ভয়াল রাতের কাহিনি তখন বর্ষা মৌসুম ছিলো যেখানে এই গণহত্যা চালিয়েছিলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তার পূর্ব-পশ্চিম দক্ষিণ তিনদিকেই মাথাভাঙা নদী উত্তরে নাটনাপাড়া গ্রাম স্বাধীনতা বিরোধীদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা এই নির্মম গণহত্যা চালায় বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে অনেকগুলো বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের হাতে নারী, পুরুষ, শিশু, শ্রমিক কেউই রক্ষা পায়নি ওই গণহত্যায় আমার পরিবারের দুজনসহ আশে পাশের আরো অনেকেই শহীদ হয় যাদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই গণহতা চালিয়েছিলো আমি সেইসকল স্বাধীনতা বিরোধী হানাদার বাহিনীর বিচার  চাই এদের বিচার হওয়া জরুরী নতুন প্রজন্ম জানুক এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের কথা 

 


শহীদ পরিবারের উদ্যোগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং গণ্যমান্যদের প্রচেষ্টায় গোয়ালগ্রামের গণহত্যার স্থান গণ কবরগুলি বিশেষভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক এই কাজের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন গোয়াল গ্রামের ইউপি সদস্য শহীদ পরিবারের সন্তান, একাত্তরের গণহত্যায় আহত ভূক্তভোগী মো. মনিরুল ইসলাম, বোয়ালিয়া ইউয়িন পরিষদের চেয়ারম্যান খোয়াজ হোসেনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারেজ উদ্দিন নির্বাহী অফিসার অরুণ কুমার মন্ডলের প্রচেষ্টায় এই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের কাজ শুরু এবং শেষ করা হয় একই বছরের ২৯ জুন এই স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদ


একাত্তর সালে বাড়ির আশে পাশে অনেক ফাকা জায়গা পূর্বপাশে ডোবা নিচু এলাকা ছিলো এখন বাড়ির চারপাশে ঘরবাড়ি বাড়ি নির্মিত হয়েছে তবে সবার কবর একই জায়গায় দেওয়া হয়নি পুরাতন গণকবরের পাশেই বর্তমান শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে তার পাশেই রয়েছে গণকবরগুলি মূলস্মৃতি স্তম্ভটি দৃষ্টিনন্দন করে তৈরি করা হয়েছে সেখানে ওই রাতে গণহত্যায় শহীদ আহতদের নামের তালিকা খোদায় করা হয়েছে একই সাথে পাকিস্তানি বাহিনীদেরকে প্রতিরোধ করতে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন এবং অংশগ্রহণ করেছেন তাদের নামের তালিকাও রয়েছে বর্তমানে স্মৃতিস্তম্ভের পাশেই কবরগুলি পাচিল দিয়ে ঘেরা এবং সংরক্ষিত আছে স্মৃতিস্তম্ভের নামে সার্বিক উদ্যোগে ০৩ শতক জমি বন্দোবস্ত করা হয়েছে

 

প্রতিবছর ০৬ সেপ্টেম্বর গোয়ালগ্রাম গণহত্যার দিনটিকে সরকারি পারিবারিকভাবে স্মরণ করা হয় উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শহীদ পরিবারের সন্তান, ভূক্তভোগী, মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সমন্বয়ে এই দিনটি উপলক্ষে কবর জিয়ারত, আলোচনাসভা, দোয়া মাহফিল কাঙালি ভোজের আয়োজন করা হয়

 

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ কোষ দ্বিতীয় খন্ডে কুষ্টিয়ার অন্যান্য গণহত্যার সঙ্গে গোয়ালগ্রাম গণহত্যা সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে সুকুমার বিশ্বাস রচিত একাত্তরের গণকবর বধ্যভূমি এবং রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব রচিত কুষ্টিয়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গ্রন্থেও গোয়ালগ্রাম গণহত্যার কথা উল্লেখ রয়েছে গোয়ালগ্রাম গণহত্যার ইতিহাস অনুসন্ধ্যান করলে স্পষ্টভাবে প্রমাণীত হয় যে, এখানে শুধু গণহত্যা গণকবরের স্থান এবং স্মৃতিই মূখ্য নয় এটি একটি যুদ্ধক্ষেত্রও


(মাঠ পর্যায়ে গিয়ে তথ্য সংগ্রহের তারিখ : ২৭ অক্টোবর, ২০১৯ এবং ০১ অক্টোবর, ২০২০।


ইমাম মেহেদী

সাংবাদিক  মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক

-মেইল emam.mehedi@gmail.com




সময় জার্নাল/ইম


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল