নিজস্ব প্রতিনিধি: সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে চারদিন ধরে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। অটো এসএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে পণ্য পরিমাপ ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালুর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি বন্ধ রেখেছেন। সফটওয়্যারভিত্তিক এ কার্যক্রম সময়সাপেক্ষ হওয়ায় আবার পুরোনো পদ্ধতিতে ওজন মেপে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার চালুর দাবি আন্দোলনরত ব্যবসায়ীদের।
তামাবিল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) তামাবিল স্থলবন্দরে পণ্য পরিমাপে অটো এসএমএস সফটওয়্যার বসানো হয়। এ পদ্ধতির ফলে ভারত থেকে তামাবিল স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসা পণ্যবাহী যানবাহনগুলো নিবন্ধন করতে হয়। একই সঙ্গে যানবাহনের ওজনও পরিমাপ করা হয়। এ পদ্ধতিতে আমদানি করা হলে স্থলবন্দরে পণ্য পৌঁছার পরপরই ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে পণ্যবাহীর গাড়ি-সংক্রান্ত তথ্য আমদানিকারকের কাছে চলে যায়।
আগে সীমান্তের দুই পাশেই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পণ্যবাহী যানবাহনের ওজন পরিমাণ করা হতো। পরে তামাবিল স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পর ওজন মাপার স্কেল স্থাপন করা হয়।
শুক্রবার বন্দরে অটো এসএমএস সফটওয়্যার চালু করা হয়। এতে প্রতিটি গাড়িকে বন্দরে এসে নতুন করে পুরো আমদানির তথ্য দিতে হচ্ছে। এ পদ্ধতি বেশ সময়সাপেক্ষ বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, এ পদ্ধতির কারণে ভ্যাট ফাঁকি ও এক পণ্যের ঘোষণা দিয়ে অন্য পণ্য আনার সুযোগ বন্ধ হবে।
এ বিষয়ে তামাবিল পাথর, কয়লা ও চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, আগে প্রতি মিনিটে অন্তত দুটি গাড়ি বন্দর পার হতো। কিন্তু এই সফটওয়্যার বসানোর পর থেকে একেকটি গাড়ি পার হতে ৮ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ৮০০ থেকে ৮৫০টি গাড়ি পণ্য নিয়ে ভারত থেকে আসে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টন পাথর আমদানি করা হয়। এ পদ্ধতি স্থাপনের ফলে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৩০টি গাড়ি পণ্য পরিবহন করতে পারবে। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তেমনি সরকারও রাজস্ব হারাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের অংশে বন্দর স্থাপন না হওয়ায় সেখানে ম্যানুয়্যাল পদ্ধতিতে পরিবহনের ওজন পরিমাপ করা হয়। তাই বাংলাদেশ ও ভারতের অংশে ওজনের পার্থক্য দেখা দেবে। এতে ব্যবসায়ীদের জরিমানা দিতে হবে। তবে ভারতের অংশে বন্দর স্থাপনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। সফটওয়্যারটি ভারতের বন্দর নির্মাণের পর চালু করা হলে ব্যবসায়ীদের আপত্তি নেই।
তামাবিল পাথর, কয়লা ও চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি আলী জালাল উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারের বিপক্ষে নয়। তবে সমন্বয় না করে অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি স্থাপন করায় ব্যবসায়ীরা হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোতে এ পদ্ধতি চালু না হলেও অদৃশ্য কারণে সিলেটে এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে তামাবিল স্থলবন্দর সিলেটের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ভূইঞা বলেন, সরকারি অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ পদ্ধতি বন্ধের দাবিতে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। আমার মনে হয় সফটওয়্যার পদ্ধতি সবার জন্যই ভালো হবে।
সময় জার্নাল/এলআর