সময় জার্নাল প্রতিবেদক : চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে করোনা সংক্রমণ রোধের কথা বলে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সভা-সমাবেশে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির মনে করে, আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য মহামারিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মঙ্গলবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এবং ওমিক্রনের বিস্তার রোধের কথা বলে ১০ জানুয়ারি সরকার যে নির্দেশাবলী জারি করেছে, তাতে ঘরোয়া পরিবেশে সভা-সমাবেশের সুবিধা বহাল রেখে উন্মুক্ত স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে বিএনপি স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের সরকারি অপপ্রয়াস বলে মনে করে।
এতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে বদ্ধ স্থানের চেয়ে উন্মুক্ত স্থানে ওমিক্রন ও কোভিড-১৯ এর বিস্তারের সম্ভাবনা কম বলেছে, সেখানে হাট-বাজার, শপিংমল, স্কুল-কলেজ ইত্যাদি স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিষেধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে রাজনৈতিক সমাবেশ বন্ধ রাখা অগ্রহণযোগ্য।
এখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার চলছে। পাশাপাশি এই মাসেই আরেক ধাপের ইউপি নির্বাচন হবে। এছাড়া, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে জেলায় জেলায় বিএনপির কর্মসূচিও চলছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি বলছে, অকারণে ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির জনসমাবেশে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল একক কিংবা যৌথভাবে বাধা সৃষ্টি করার পরেও জনগণ তা প্রতিহত করে সফলভাবে সমাবেশ অনুষ্ঠান করায় সরকার জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কোভিড-১৯ এবং ওমিক্রনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে উন্মুক্ত স্থানে কোনো সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ কয়েকটি বিধি-নিষেধ দিয়েছে সরকার।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারনে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে মহামারির তৃতীয় ঢেউ চলছে। বাংলাদেশেও গত কয়েকদিন ধরে করোনা সংক্রমণ ও শনাক্তের হার বেড়ে গিয়েছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২ হাজার ৪৫৮ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। একই সময়ে দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুইজন। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১১টি ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন দেয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাস-ট্রেন আবার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে। উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার থেকে (১৩ জানুয়ারি) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।
সময় জার্নাল/এসএ