সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী রোগ নিরাময় ও রোগ প্রতিরোধ বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে এমন গবেষণায় অধিক মনোযোগী হতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক অডিটোরিয়ামের সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির উদ্যোগে ভিটামিন ডি এর স্বল্পতা (ভিটামিন ডি ডিফিসিয়েন্সি: মিথ অর ফ্যাক্ট) নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চিকিৎসেবার পাশাপাশি গবেষণার প্রতি আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। ভিটামিন এর স্বল্পতা প্রসঙ্গে বলেন, চিকিৎসাসেবার প্রয়োজনে সকল বিষয়ের চিকিৎসকদেরই ভিটামিন ডি এর বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং এ বিষয়ে সর্বশেষ গবেষণা ফলাফল সম্পর্কে অবহিত থাকতে হবে। ভিটামিন ডি এর স্বল্পতার কারণে মানুষ নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যেসকল মানুষের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে তাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির জটিলতাও অধিক পরিলক্ষিত হয়।
সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে ‘রোল অন ভিটামিন ডি অন এস্কেলেটাল এন্ড এক্সট্রাএস্কেলেটাল ডিজিজেস’ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু শাহীন, ‘ম্যানেজমেন্ট অফ অস্টিওপোরোটিক ফ্যাকচার’ বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিত কুমার কুন্ডু, ‘বায়োকেমিক্যাল এক্সপেক্ট্রাম এন্ড ডিটারমিনেশন অফ ভিটামিন ডি’ বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাসুম আলম। সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, অধ্যাপক ডা. মিনহাজ রহিম চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. এম এ হাসানাত, অধ্যাপক ডা. মোঃ মতিউর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন ।
অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু শাহীন তার উপস্থাপিত প্রবন্ধে ভিটামিন ডি এর স্বল্পতা থাকলে যেসকল রোগ হতে পারে তা নিয়ে বিষদ আলোকপাত করেন। ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের রিকেট, বড়দের অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওম্যালেসিয়ার মতো নীরবঘাতক রোগ হয় যাতে মানুষের হাড় ভেঙ্গে যায়, মানুষ পঙ্গু হয়ে যায়। ভিটামিন ডি এর স্বল্পতার সাথে ব্রেইন, হার্টের রোগের সম্পর্ক রয়েছে, এমনকি ক্যান্সার ও কিছু সংক্রামক রোগেরও সম্পর্ক রয়েছে। তবে আমরা যদি একটু সচেতন হই, বিশেষ করে খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন এনে দুধ জাতীয় খাবার যথাযথ পরিমাণে গ্রহণ করি তাহলেই এসব রোগ থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকতে পারব।
সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিত কুমার কুন্ডু তার প্রবন্ধে বলেন, বিশ্বের ৬০ বছর বয়সী প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন মানুষ অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত। হাড়ের দুর্বলতার কারণে এই বয়সে মানুষদের সামান্য আঘাত বা পড়ে গিয়ে মেরুদন্ডের, হিপজয়েন্টে ও হাতের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ার প্রবণতা বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে এই অবস্থা প্রতিরোধের জন্য শরীরে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর স্বল্পতা দূর করতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে সূর্যের আলো গ্রহণ ছাড়াও নিয়মিতভাবে কিছু ওষুধ সেবন করা উচিত। এছাড়াও চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপন ফিরে পাওয়া সম্ভব।
সময় জার্নাল/ইএইচ