মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এইচ জে সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রূপম সেনগুপ্তসহ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বাণিজ্য-অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন বিক্ষুব্ধ অভিভাবকবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ বঙ্গবন্ধু স্কয়ার এলাকায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
ভুক্তভোগী আবদুল্লাহ আল মামুন তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ষষ্ঠ শ্রেণিতে অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম থাকলেও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রূপম সেনগুপ্ত সরকারের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ৪ ধরনের ফরম বিক্রি করেন। দুই ধরনের ফরমে ক্রমিক নং কম্পিউটারাইজড আর দুই ধরনের ফরমের ক্রমিক নং হাতে লেখা ছিল। আর হাতের লেখা ক্রমিক নং ফরমে অনিয়ম করেন রূপম সেনগুপ্ত।
অধিকাংশ অভিভাবক ৮-১০টি ফরম ক্রয় করেন। এ ধরনের পরামর্শ পছন্দের (যাদের থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন) অভিভাবকদেরকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রূপম সেনগুপ্ত নিজেই দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এতে করে একজন ছাত্র লটারীতে একাধিকবার চান্স পায়। একাধিকবার চান্স পাওয়া ছাত্রের একটি রোল রেখে বাকিগুলো ওই হাতের লেখা ক্রমিক নং দেওয়া ফরমের মাধ্যমে তাদের অভিভাবকদের থেকে ২০-৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে চান্স না পাওয়া ছাত্রদের ভর্তি করান। এছাড়াও তিনি আরও অভিযোগ করেন, অনলাইনে ভর্তি ফরম পূরণ করা হলে এ ধরনের অনিয়ম করা সম্ভব হতো না। আমিও একটি ফরম ক্রয় করেছি। সরকারি বিধি মোতাবেক দুই শাখায় ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার নিয়ম থাকলেও ৬ জানুয়ারি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ১৪০ জন শিক্ষার্থীর নাম হাজিরা খাতায় পাওয়া যায়। এছাড়াও রূপম সেনগুপ্ত ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি বাবদ ১২৬০ টাকা করে আদায় করছেন।
মোহাম্মদ মোশারফ নামের এক অভিভাবক বলেন, কুমিল্লা জিলা স্কুল ও ফয়েজুন্নেছা স্কুলসহ দেশের সকল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই শিফটে ক্লাস হয়। ব্যতিক্রম শুধু চৌদ্দগ্রাম এইচ জে সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। সরকারি হওয়ার পরে শিক্ষার্থী ভর্তি সংরক্ষিত বা সীমিত করার কারণে চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার ৩ ভাগের ২ ভাগ শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়টিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। উপজেলা সদরে পৌর এলাকায় বিকল্প কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। ফলে আমাদের সন্তানরা অনেক দূরে গিয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে না পেরে এখানেই লেখাপড়ার ইতি টানছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রূপম সেনগুপ্ত বলেন, বোর্ড থেকে অনলাইনের এখনও কোন সফটওয়্যার না দেওয়াতে ফরমের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হয়েছে। এতে কোন অনিয়ম হয়নি। সরকারী বিধি মোতাবেক শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে অভিভাবক ও সুধীমহলের উপস্থিতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ‘টাকা গ্রহণ করে অনিয়মের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করার বিষয়ে তিনি বলেন-এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়, এটি সম্পূর্ণ তথ্য বিভ্রাট।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজুরুল হক বলেন, ‘মৌখিকভাবে এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে কোন সত্যতা পাইনি। তারপরও সংক্ষুদ্ধ কোন অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।
এমআই