নিজস্ব প্রতিনিধি: ভিসির পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৮টার দিকে এ ঘোষণা দেন তারা।
এ ঘোষণার মধ্যদিয়ে দীর্ঘ এক মাস পর আন্দোলন থেকে সরে এলেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, আমাদের দাবি পূরণে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা তাদের ওপর আস্থা রেখে আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলাম। আমরা আগামীকাল থেকে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক করে ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বান জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশও করেছিলেন ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করে ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
ভিসির দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা এলো।
সিট বণ্টন, খাবার সমস্যা, ওয়াইফাই সমস্যা, পানির সমস্যা, বাইরের হোস্টেলের ভাড়া নিয়ে দিন দিন শিক্ষার্থীদের সাথে হল প্রভোস্ট বডির দূরত্ব বাড়ছিল। ছাত্রীদের অভিযোগ, এসব বিষয়ে অভিযোগ করে প্রভোস্ট বডির ‘অসদাচরণের’ শিকার হয়েছেন তারা।
এসব কারণে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে ভিসিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ ভিসিকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
এরপর শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় ভিসিকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করে এতদিন আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।