বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২২
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইউক্রেন সীমান্তে লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। পশ্চিমা বিশ্বের শঙ্কা, ইউক্রেনে যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, আজ বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে পারে রাশিয়া। এ নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। তবে প্রশ্ন জেগেছে রাশিয়া কি আসলে আজ ইউক্রেনে হামলা চালাবে?
যুদ্ধের শঙ্কায় ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটিতে আজকের দিনটিকে আগে থেকেই জাতীয় ঐক্যের দিবস বা ইউনিটি ডে হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনিনাগরিকদের ইউক্রেনের পতাকা ওড়ানো ও দেশটির জাতীয় রঙ- নীল ও হলুদ ব্যাজ পরার আহ্বান জানান।
তবে গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়া ঘোষণা করে, ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে তাদের কিছু সৈন্য রুশ ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে। রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখানো হয়েছে রেলওয়ের খোলা ওয়াগনে কিছু ট্যাংক এবং সাঁজোয়া গাড়ি তোলা হচ্ছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সামরিক যানবহর ক্রাইমিয়ার সেতু পার হয়ে চলে যাচ্ছে।
তবে রাশিয়া এমন ঘোষণা এখন পর্যন্ত বিশ্বাস করেনি পশ্চিমা বিশ্ব। পশ্চিমা বিশ্বের শঙ্কা, এখনো ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া।
সীমান্ত থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে রাশিয়ার বক্তব্যের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে মনে হচ্ছে সীমান্ত এলাকায় রাশিয়া তাদের সেনা সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করেছে।
জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বাইডেন বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার 'এখনও জোর সম্ভাবনা রয়েছে'। যদি সেরকম কিছু হয় তাহলে তার মানবিক মূল্য হবে অনেক বেশি। আমাদের বিশ্লেষকরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে তাদের অবস্থান এখনও হুমকি হিসেবেই রয়ে গেছে।
অন্যদিকে আজ বুধবার রাশিয়া ঘোষণা করেছে, মস্কোর দখল করে নেওয়া ক্রিমিয়াতে তাদের সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৌশলগত অনুশীলনে অংশগ্রহণ শেষ করে সৈন্যরা তাদের স্থায়ী ঘাঁটিতে চলে যাচ্ছে।'
তবে কতো সৈন্য ফেরত যাচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে ন্যাটোসহ ইউরোপের নেতারাও রাশিয়ার তৎপরতার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সন্দিহান। তারা বলছেন, রাশিয়া যে ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে সরে যাচ্ছে তার কোনো চিহ্ন তারা এখনও দেখতে পাচ্ছেন না।
ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, পরিস্থিতি মনে হচ্ছে উল্টো। মনে হচ্ছে রাশিয়ার তাদের সামরিক সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুটো ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট সাইবার হামলার শিকার হয়েছে।
এছাড়া জেলেনেস্কি বলেন, ইউক্রেন সীমান্তের কাছ থেকে রুশ সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। আমরা শুধু শুনেছি রাশিয়া সেনা সরিয়ে নিচ্ছে তবে দৃশ্যত কিছু আমরা এখনো দেখিনি।
এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধের শঙ্কায় এখন পর্যন্ত ১২টির বেশি দেশ তাদের নাগরিককে ইউক্রেন ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা।
এমআই