আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে প্রায় ২ হাজার ২০০ বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। নিহতদের সবাই রুশ আক্রমণেই প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করেছে শহর কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রোববার (১৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
রোববার টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় মারিউপোল শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর চালানো হামলায় রোববার পর্যন্ত মারিউপোলের ২ হাজার ১৮৭ জন বাসিন্দা নিহত হয়েছেন।’
কর্তৃপক্ষ বলছে, শহরটিতে প্রায় ১০০টি বোমা ফেলা হয়েছে। এছাড়া গত বুধবার শহরের শিশু ও প্রসূতি হাসপাতালে রুশ সেনাদের চালানো বোমা হামলায় ১৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়েছে মস্কো।
প্রায় ৫ লাখ বাসিন্দার মারিউপোল শহরটি দখল করা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি আজভ সাগরে ইউক্রেনের কৌশলগত বন্দর এবং ডনবাস অঞ্চলে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর কাছেই অবস্থিত।
এএফপি বলছে, চলতি মাসের শুরু থেকেই কৌশলগত এই বন্দরনগরী রুশ সেনাদের অবরোধের মধ্যে রয়েছে এবং সেখানকার বাসিন্দারা খাবার ও পানির সংকটের মধ্যে রয়েছেন। ইউক্রেনের সরকার ও অন্যান্য সাহায্য সংস্থাগুলো শহরের এই পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ‘গত ১২ দিন ধরে শহরের বাসিন্দারা খারাপ অবস্থায় রয়েছে। শহরে বিদ্যুৎ, পানি বা বাতাস গরম করার (তাপমাত্রা বাড়ানোর) কোনো ব্যবস্থা নেই। মোবাইল সংযোগ নেই বললেই চলে। খাবার ও পানীয় যতটুকু ছিল সেটিও শেষ হয়ে যাচ্ছে।’
এর আগে গত বুধবার মারিউপোলের শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, অবরোধের প্রথম ৯ দিনে রাশিয়ার হামলায় মোট এক হাজার ২০৭ জন বেসামরিক বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে মানবিক করিডোর খুলে দেওয়া হলেও শহরে এখনও প্রায় ৪ লাখ বেসামরিক মানুষ আটকে আছেন বলেও দাবি করেছে তারা।
এএফপি বলছে, মানবিক সহায়তা নিয়ে একটি গাড়িবহর মারিউপোলের উদ্দেশে যাত্রা করলেও গত শনিবার শহরের বাইরে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর চেকপোস্টে সেটি আটকে দেওয়া হয়। রোববার এটি মারিউপোলে পৌঁছানোর কথা ছিল।
এদিকে মারিউপোলে আটকে পড়া বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে নিতে তুরস্ক রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বলে রোববার জানিয়েছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু।
এমআই