মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আফিফ-মিরাজের লড়াইয়ের পর ১৯৪ রানে থামলো বাংলাদেশ

রোববার, মার্চ ২০, ২০২২
আফিফ-মিরাজের লড়াইয়ের পর ১৯৪ রানে থামলো বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের দৃশ্যপট যেন তুলে ধরলেন আফিফ হোসেন আর মেহেদী হাসান মিরাজ। ২১৬ রানের জবাব দিতে নেমে সেদিন ৪৫ রান তুলতেই নেই হয়ে গিয়েছিল ৬ উইকেট। সপ্তম উইকেটে আফিফ-মিরাজের অবিচ্ছেদ্য ১৭৪ রানের জুটিতে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। সেই আফিফ-মিরাজের ব্যাটেই যেন আজ শনিবার মান বাঁচলো টাইগারদের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটি পেয়েছে ১৯৪ রানের পুঁজি।

জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ দলের শুরুটা হয় ভুতুড়ে। টস জিতে আগে ব্যাট করতে চেয়ে স্বাগতিক পেসারদের হাতে যেন যুদ্ধের মূল অস্ত্রটাই তুলে দিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তাতে কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি, ওয়েইন পার্নেলদের করা ডেলিভারিগুলো আগুনের গোলা হয়ে ছুঁটতে থাকে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের দিকে। নিখুঁত লাইন-লেংথের সঙ্গে সুইং আর বাউন্সের সামনে নিজেদের সঁপে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না তামিম, লিটন দাস, সাকিব আল হাসানদের।


শুরুতেই সফরকারীদের টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়ে বড় সংগ্রহের স্বপ্নের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন প্রোটিয়া পেসাররা। ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দল সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে যা একটু লড়লো আফিফ-মিরাজের ব্যাটে। আফিফের অর্ধশতিক হাঁকানো ১০৭ বলে ৭২ রানের ইনিংসের সঙ্গে মিরাজের ৪৯ বলে ৩৮ রানের পরেও বাকিদের ব্যর্থতায় ১৯৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশ দলের ইনিংস।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো পিংক ডে ওয়ানডে খেলতে নামে বাংলাদেশ। এই পিংক ডে ওয়ানডেতে প্রোটিয়ারা গোলাপি জার্সিতে গায়ে মাঠে নামে। এর মাহাত্ম্য হলো স্তন ক্যানসার বিষয়ক সচেতনতা। প্রতিবছর স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি ওয়ানডে খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। গোলাপি জার্সি গায়ে চাপালে রীতিমত প্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে তারা। তার উত্তাপ এবার টের পেল বাংলাদেশ দল। যার শুরুটা তামিমকে দিয়ে।

লিটনকে নিয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামা তামিম আজও চেয়েছিলেন ধীরে খেলার নীতিতে শুরুর কয়েকটা ওভার কাটিয়ে দিতে। কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ফিরতে হলো তাকে। বাড়তি বাউন্সের জন‍্য লুঙ্গি এনগিডির ডেলিভারি ঠিক মতো খেলতে পারলেন না তামিম। ব‍্যাটের কাঁধে লেগে উঠে গেল সহজ ক‍্যাচ। ৪ বলে ১ রান করেন তামিম।

৭৭ রান করে আগের ম্যাচের নায়ক সাকিব আল হাসান এ ম্যাচে রানের খাতা খুলতে পারলেন না। রাবাদার বাড়তি বাউন্সের বলটি লেগ সাইডে ঘোরানোর চেষ্টা করেন সাকিব। ঠিক মতো খেলতে পারেননি, ব‍্যাটের কানায় লেগে ক‍্যাচ যায় কাভারে। একটু সরে গিয়ে লাফিয়ে মুঠোয় জমান কাইল ভেরেইনা। ৬ বলে শূন্য হাতে সাজঘরে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। লিটনকে নিয়ে আশার বেলুন ফোলানোর আগেই তিনিও ধরলেন সাজঘরের পথ। রাবাদার বল অনেকটা লাফিয়ে লিটনের গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ল কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে। ১৫ রানে ফিরলেন তিনি।

২৩ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটিকে টেনে তোলার দায়িত্ব পড়ে মুশফিকুর রহিম আর ইয়াসির আলি রাব্বির কাঁধে। তবে এই ভার নিজেদের কাঁধে রাখতে পারলেন না তারা। রানের খাতা খোলার আগে একবার জীবন পাওয়া রাব্বি সে জীবনের মূল্য দিতে পারলেন না। রাবাদার লাফিয়ে ওঠা বল অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তবুও তাড়া করতে যান রাব্বি। ব‍্যাটের কানায় লেগে সহজ ক‍্যাচ যায় ব‍্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। ১৪ বলে করেন ২ রান করে আউট হন তিনি।

সতীর্থদের দেখানো পথে হাঁটলেন মুশফিকুর রহিমও। অসংখ‍্য ম‍্যাচে ইনিংস মেরামত করে বাংলাদেশকে বাঁচানো মুশফিকুর রহিমও ব‍্যর্থ এবার। বাঁহাতি পেসার পার্নেলের বল লেগ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া সময় বাড়তি সুইং আশা করেছিলেন মুশফিক। কিন্তু তার প্রত‍্যাশার চেয়ে সুইং ছিল বেশ কম। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ না নিয়ে ৩১ বলে ১১ করে ফেরেন মুশফিক।

মুশফিকের আউটের পর পার্নেল চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে বাভুমা, শামসি, মজারাজদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৬০ রানের জুটি। তবে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ইনিংসের ২৮তম ওভারের প্রথম বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে লেগ স্লিপে মালানের হাতে ক্যাচ দেন এই ব্যাটসমান। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ২৫ রান।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর দলীয় একশ রানের কোটা পূর্ণ করে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়ে অর্ধশত তুলে নেন তিনি। ৭৯ বলে ৭টি দারুণ চারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পান আফিফ। অন্যদিকে মিরাজও অন্যপ্রান্ত থেকে রান করছিলেন। আফিফ যখন শতকের দিকে এগোচ্ছিলেন তখনই রাবাদার চতুর্থ শিকার হন তিনি। আফিফের ১০৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস থামান রাবাদা।

সেই ওভারেই রাবাদার ম্যাচের পঞ্চম শিকার হন মিরাজ। দারুণ খেলতে থাকা মিরাজ থামেন ৪৯ বলে ৩৮ রান করে। তাদের বিদায়ে ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১৯৪ রানে। রাবাদা ৫টি এবং ১টি উইকেট উইকেট লাভ করেন এনগিদি, শামসি, ডুসেন।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল