সময় জার্নাল ডেস্ক:
ইউক্রেনের মারিউপোলে আটকা পড়া বেসামরিকদের সরিয়ে আনার লক্ষ্যে ফের রেডক্রসের গাড়িবহর অবরুদ্ধ বন্দরনগরীটির দিকে যাচ্ছে। শনিবার এমন এক সময়ে মারিউপোলের উদ্দেশে এই গাড়িবহর রওনা হয়েছে, যখন রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্বে নতুন উদ্যমে হামলা শুরু করতে সংগঠিত হচ্ছে।
পাঁচ সপ্তাহ ধরে চলা রাশিয়ার ‘বিশেষ’ সামরিক অভিযানের শুরুর দিকেই মারিউপোলকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছিল; ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চল দনবাসের এই শহরটিকে কব্জায় নেওয়াই এখন পর্যন্ত মস্কোর প্রধান ‘লক্ষ্য’ বলে মনে করা হচ্ছে। শহরটিতে এখনো লাখো মানুষ আটকা পড়ে আছে, তারা চরম খাদ্য ও পানির ঘাটতিতে আছে।
আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) শুক্রবার তাদের একটি দলের নেতৃত্বে ৫৪টির মতো বাস ও অন্যান্য গাড়ির একটি বহর পাঠালেও ‘পরিস্হিতির কারণে লোকজনকে বের করে আনা অসম্ভব’, এমনটি জানিয়ে তারা ফিরে আসে। আইসিআরসি বলেছে, শনিবার তারা ফের বেসামরিকদের নিরাপদে বের করে আনার চেষ্টা করবেন। মার্চের শুরুতেও বেসামরিকদের বের করে আনতে উদ্যোগ নিয়েছিল রেডক্রস; কিন্তু বের করে আনার পথ অনিরাপদ বিবেচিত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ঐ উদ্যোগ পরিত্যক্ত হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে মস্কো ও কিয়েভ বিভিন্ন শহরে মানবিক করিডোর খোলায় সম্মত হয়; যার মাধ্যমে হাজার হাজার বেসামরিক নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ পান।
আইসিআরসি বলছে, মারিউপোলে তাদের কর্মকাণ্ডের বিষয়টি দুই পক্ষই অনুমোদন করেছে; কিন্তু মানবিক করিডোরের সময়সীমা এবং গাড়িবহরের গন্তব্যের মতো অনেক বিষয় নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
রুশ সেনাদল এখন দনবাস অঞ্চল ও উত্তরপূর্বের খারকিভের দিকে যাচ্ছে জানিয়ে শনিবার ভোরের দিকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় সতর্ক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, মারিউপোল পরিস্হিতির সমাধান এখনো আছে বলেই আমার আশা। সমগ্র বিশ্বের এই মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত।
রাশিয়া বলছে, তাদের এই ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ লক্ষ্য হচ্ছে ইউক্রেনকে ‘নিরস্ত্রীকরণ’ ও এর শীর্ষ নেতৃত্বকে ‘নাত্সিমুক্ত’ করা। পশ্চিমা দেশগুলো একে দেখছে আগ্রাসন হিসেবে, যা হাজারও মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, ইউক্রেনের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশকে ঘরছাড়া করেছে এবং রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে উত্তেজনাকর পর্যায়ে নিয়ে গেছে।