মাসুম জাকি : আল্লাহর রাসূল (সা:) যখন রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন তখন তিনি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহারে জন্য সাহাবীদের পরামর্শে নিজের নামে সিলমোহর বানালেন। রাসূলাল্লাহ(সা:) এর সিলমোহর লেখা ছিল '' মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল'।
রাসূলাল্লাহ (সা:) এর মৃত্যুর পর আবু বকর (রা:) রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে শপথ নিলেন। তখন তার নামেও সিলমোহর বানানোর প্রয়োজন পড়লো। কিন্তু আবু বকর (রা:) কোনোভাবেই নিজের নামে সিলমোহর বানানোর সাহস পেলেন না। তিনি বললেন, কাগজের পাতায় পাতায় আমার নামে সিল থাকবে, হাশরের মাঠে আল্লাহ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে তোর নাম এতো জায়গায় লেখা ছিল কেন? তখন আমি কি জবাব দিবো? এই কথা শুনে সাহাবীরা বললেন যে তাহলে 'খলীফাতুল মুসলিমিন অর্থাৎ 'মুসলমানদের প্রেসিডেন্ট' এই নামে সিলমোহর বানানো হোক। কিন্তু তবুও আবুবকর (রা:) রাজি হলেন না। তিনি বললেন যে আমি তো নিজেকে একজন সাধারণ আসামি ব্যতীত অন্য কিছু ভাবিনা, তাই আমার নামের সাথে খলিফা লেখা যাবেনা।
কিন্তু বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে চিঠি আদান প্রদানের জন্য তো সিলমোহর লাগবেই, তাই আবু বকর (রা:) তার সিলমোহর লিখলেন ' কুলিল খাইরা' যার অর্থ 'কথা বললে ভালো কথা বলো, মন্দ কথা বলোনা''।
হজরত আবু বকর (রা:)-এর মৃত্যুর পর যখন হজরত ওমার (রা:) খলিফা হিসেবে দায়িত্ত নিলেন তখন তিনিও নিজের নামে সিলমোহর বানান নি। তার সিলমোহর লেখা ছিল 'কাফা বিল মউতি ওয়া ইজান' অর্থাৎ ''সব সময় তোমার মৃত্যুর কথা স্মরণ করো''।
হজরত ওমার (রা:)-এর মৃত্যুর পর যখন হজরত ওসমান (রা:)খলিফা হিসেবে দায়িত্ত নিলেন তখন তিনিও নিজের নামে সিলমোহর বানানোর সাহস দেখান নি। তার সিলমোহর লেখা ছিল 'মিন হুসনি ইসলামিল মারিই তরকুহূ মালা ইংয়নি' অর্থাৎ '' ওই সমস্ত জিনিস বর্জন কর যেই জিনিসের কোনো প্রয়োজন নেই''।
মুসলিম শাসকগণ রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনেও নিজের নাম পর্যন্ত লেখার সাহস করেন নি। আর আমরা নাম নিয়ে কি করি !!