আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রবল আন্দোলনে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। এদিকে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না বলে দেশটির সংসদের একজন হুইপ জানিয়েছেন।
প্রচণ্ড অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জনসাধারণের মধ্য থেকে তার পদত্যাগের দাবি আসছিল। এর মধ্যেই প্রেসিডেন্টের তরফ থেকে এমন ঘোষণা এলো।
ব্যাপক বিদ্যুৎ, খাদ্য, গ্যাসসহ জরুরি পণ্যের তীব্র সংকটের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে প্রবল গণবিক্ষোভ চলছে।জনরোষের কারণে প্রায় সব মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য সরকার পক্ষ ত্যাগ করেছেন।
বিরোধী এমপিদের প্রেসিডেন্ট জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ দেয়ার আহবান জানালেও তারা সেটি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে প্রেসিডেন্টসহ পুরো সরকারকেই পদত্যাগ করতে হবে।
তবে বুধবার সরকার পক্ষের চিফ হুইপ জনস্টন ফার্নান্দো এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, 'দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে আমরা বলতে চাই, কোনো পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না।'
এর আগে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দলীয় বেশ কিছু এমপির দলছাড়ার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার রাতে রাজাপাকসে জরুরি আইন তুলে নেন।
নিজের বাসভবনের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভের জের ধরে তিনি ১ এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। মঙ্গলবার সেটি তুলে নিলেও ওই দিনেই তার দলের ৪১ জন এমপি দল ছেড়ে নিজেদের স্বতন্ত্র ঘোষণা করেন।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এবারেই সবচেয়ে বড় সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। ব্যাপক আমদানি নির্ভর দেশটির খাদ্য, জ্বালানিসহ দরকারি পণ্য কেনার মতো বৈদেশিক মুদ্রা নেই। দিনে ১৩ ঘণ্টার মতো লোডশেডিং, ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যসহ মৌলিক পণ্যগুলোর ঘাটতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
বুধবার দেশজুড়ে গণবিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। জানুয়ারি থেকেই শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভ চলে আসছে। তবে গত ১৪ দিনে অনেক বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে আসার কারণে পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন যে মানুষ চাল,ডালসহ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম দরকারি জিনিসগুলোও পাচ্ছে না। এমনকি কাজে বা স্কুলে যাওয়ার জন্য বাস পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হলেও কোথাও কোথাও সহিংসতা দেখা গেছে বিশেষ করে রাজনীতিকদের বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে আর পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকে। মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার সংস্থা শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সময় জার্নাল/এলআর