আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনে যুদ্ধের সময় রাশিয়ান সৈন্যদের দ্বারা সংঘটিত নৃশংসতার উচ্চমাত্রার অভিযোগের পরে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে স্থগিত করার জন্য ভোট দিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে বুধবার অনুষ্ঠিত ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৯৩ সদস্য রাষ্ট্র, বিপক্ষে ২৪ এবং ৫৮টি সদস্য রাষ্ট্র অনুপস্থিত ছিল। জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিত বিষয়ক এক রেজুলেশন ভোট দানে বিরত থেকেছে বাংলাদেশ।
ভারত-পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে সাতটি দেশও এ ভোট দানে বিরত ছিল। বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে প্রস্তাবটি ভোট দেয়া দেশগুলোর দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন পাওয়ায় রাশিয়াকে জাতিসঙ্ঘের মাঙনবাধিকার কাউন্সিল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৯৩টি দেশ, বিপক্ষে ২৪টি দেশ ভোট দিয়েছে। বাংলাদেশসহ ৫৮টি দেশ ভোট দানে বিরত ছিল। এতে ভোটদানে বিরত দেশগুলোকে গণনা করা হয়নি।
জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের খসড়া প্রস্তাব অনুসারে, কোনো সদস্য রাষ্ট্র মানবাধিকারের স্থূল এবং নিয়মতান্ত্রিক লঙ্ঘন করে এমন কাউন্সিলের সদস্যের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যতার অধিকার স্থগিত করতে পারে।
জাতিসঙ্ঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সামনে মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে স্থগিত করার জন্য একটি মামলা করেছেন, যা তিনি এবং জাতিসঙ্ঘের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলো চাপ দিচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, ‘রাশিয়ার এমন একটি সংস্থায় কর্তৃত্বের অবস্থান থাকা উচিত নয় যার উদ্দেশ্য- যার উদ্দেশ্য--মানবাধিকারের প্রতি সম্মান বৃদ্ধি করা। এটি কেবল ভন্ডামির উচ্চতাই নয়- এটি বিপজ্জনক।’
বৃহস্পতিবার ভোটের আগে জাতিসঙ্ঘে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সার্জি কিসলিয়্যাস কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে স্থগিত করার প্রস্তাব সমর্থন করার জন্য জাতিসঙ্ঘের সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন ‘এখন বিশ্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এসেছে। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আমাদের সীমানাটি বিশ্বাসঘাতক কুয়াশার মধ্য দিয়ে মারাত্মক আইসবার্গের দিকে যাচ্ছে। মনে হতে পারে আমাদের মানবাধিকার কাউন্সিলের পরিবর্তে এটির নাম টাইটানিক রাখা উচিত ছিল। আর এজন্য আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। মানবাধিকার কাউন্সিলকে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আজই একটি পদক্ষেপ নিতে হবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জাতিসঙ্ঘের পরিচালক লুই চারবোনিউ একটি বিবৃতিতে বলেন, মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়ার স্থগিতাদেশ ‘একটি স্পষ্ট বার্তা’ দিচ্ছে যে মানবাধিকার কাউন্সিলে তাদের আর কোন কাজ নেই।
সময় জার্নাল/এলআর