নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
তামিম ইকবাল আর নাজমুল হোসেন শান্তর জুটিটা জমেছিল বেশ। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দুইজন চাপ তৈরি করেন দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে। এই পার্টনারশিপ ভাঙতে একের পর বোলার পরিবর্তন করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ডিন এলগার। তাতে সফল হলেন তিনি। ভিয়ান মুল্ডার তামিমকে ফেরাতেই ধস নামে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে। শেষ বিকেলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ফলোঅনের শঙ্কায় অধিনায়ক মুমিনুল হকের দল।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ১৩৯ রান। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের চেয়ে এখনো ৩১৪ রানে পিছিয়ে টাইগাররা। ফলোঅন এড়াতে হলে অন্তত ২৫৪ রান করতে হবে সফরকারীদের, অর্থাৎ এখনো প্রয়োজন ১১৫ রান। এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে যা শুধু কষ্টকরই নয়, বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জ জিততে আগামীকাল (রোববার) ম্যাচের তৃতীয় দিনে মুশফিকুর রহিম ৩০ আর ইয়াসির আলি রাব্বি ৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামবেন। হাতে একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ।
৫ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দাপুটে ব্যাটিংয়ে ২ উইকেট হারিয়ে এই সেশনে যোগ করে ১০৬ রান। দ্বিতীয় সেশনে বাকি ৩ উইকেট হারিয়ে অলআউট হলেও প্রোটিয়াদের স্কোর বোর্ডে জমা হয় আরো ৬৯ রান। প্রথম ইনিংসে মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৫৩ রান। বাংলাদেশের হয়ে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম একাই নেন ৬ উইকেট। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে দেড়শ উইকেট নেওয়ার মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
তৃতীয় সেশনে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ দল। হারিয়ে বসে ডারবান টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয়কে। ডুয়ানে অলিভিয়ের করা বলটি পিচ করে বাইরে বেরিয়ে যায় অনেকটা। জয় সুইংয়ের অপেক্ষা না করেই পা বাড়িয়ে ড্রাইভ করেন। ব্যাটের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ যায় প্রথম স্লিপে। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন এই ওপেনার।
প্রথম ওভারে উইকেট পড়লেও দলকে চাপ অনুভব করতে দেননি প্রায় এক বছর পর টেস্ট দলে ফেরা তামিম। তিনে নামা বাঁহাতি শান্তকে সঙ্গে নিয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের শাসন করেন তিনি। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে দুইজনেই ছুটতে থাকেন ব্যক্তিগত ফিফটির পথে। এই জুটি প্রোটিয়াদের মাথা ব্যথার কারণ হলে একের পর এক বোলার পরিবর্তন করেন এলগার।
ইনিংসের ২১তম ওভারে ফিরেই অধিনায়কের আস্থার মান রাখেন ভিয়ান মুল্ডার। ফেরান আগ্রাসী হয়ে ওঠা ওপেনার তামিমকে। মুল্ডারের রাউন্ড দা উইকেটে করা ডেলিভারি অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকে, অন সাইডে খেলার চেষ্টায় তামিম ব্যাটের মুখ ঘুরিয়ে ফেলেন একটু আগেই। বল লাগে প্যাডে। নিশ্চিত আউট জেনেই রিভিউ নেননি তামিম। ৮ চারে ৫৮ বলে ৪৭ করে ফেরেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে শান্তর সঙ্গে জুটির সমাপ্তি ৭৯ রানে।
তামিমের আউটের পর ধস নামে বাংলাদেশ শিবিরে। মুল্ডার এবার ফেরান শান্তকে। তামিমের মতো শান্তও অন সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের মুখ ঘুরিয়ে ফেলেন আগেই। বল লাগে প্যাডে। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ আবেদন করে সফল হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। শান্ত আউট হন ৭৪ বলে ৩৩ করে। এরপর একে একে ফেরেন মুমিনুল (৬) আর লিটন দাস। ৮২ থেকে ১২২, এই ৪০ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা।
পরে অবশ্য দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি মুশফিক। রাব্বিকে সঙ্গে নিয়ে দেখেশুনে খেলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেন তিনি। দুইজনের অবিচ্ছেদ্য পার্টনারশিপ থেকে আসে ১৭ রান।
এমআই