শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে গোপনাঙ্গে পুলিশের লাথিতে রবিউল ইসলাম খান (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত সদর থানার এসআই হালিমকে ক্লোজ করা হয়েছে।
শুক্রবার(১৫ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহ আলম।
এর আগে যুবক মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিনগত মধ্যরাতে এবং শুক্রবার(১৫ এপ্রিল) সকালে জেলা সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগরে মহাসড়ক (লালমনিরহাট-রংপুর) অবরোধ করে এলাকাবাসী।
মৃত রবিউল মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামের দুলাল খানের ছেলে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নববর্ষ উপলক্ষে মহেন্দ্রনগর বাংলাবাজার এলাকায় মেলা বসায় স্থানীয়রা।
মেলাকে ঘিরে রাতে জুয়ার আসর বসলে গোপন খবরে সেখানে অভিযান চালিয়ে রবিউল ইসলাম খানসহ দু’জনকে আটক করে পুলিশ। অন্য জুয়াড়িরা পালিয়ে যান।
তবে সে সময় রবিউল জুয়া খেলেনি দাবি করে পুলিশভ্যানে উঠতে আপত্তি জানান। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়। একপর্যায়ে রবিউলকে মারধর ও জোর করে টেনে পুলিশভ্যানে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পথে রবিউল অসুস্থতাবোধ করলে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নেওযার পরামর্শ দেন। কিন্তু রমেকে নেওয়ার প্রস্তুতির সময় জরুরি বিভাগেই রবিউলের মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর এ খবরে দিনগত রাতেই মহেন্দ্রনগর বাজারে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে অভিযুক্ত সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হালিমের শাস্তি দাবি করেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশভ্যানে হামলা ও ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা।
একই দাবিতে শুক্রবার(১৫ এপ্রিল) সকাল থেকে একই স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে রবিউলের হত্যাকারী পুলিশ সদস্যের কঠোর শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী। অবশেষে অভিযুক্ত সদর থানার উপ পরিদর্শক(এসআই) হালিমকে দুপুরে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। এরপর অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী।
রবিউলের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, রবিউল জুয়া খেলেনি তাই পুলিশভ্যানে উঠতে রাজি হয়নি। সে সময় পুলিশের সঙ্গে তার বিতর্ক হলে তাকে মারধর করে ও জোর করে টেনে পুলিশভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। লাথি মারা হয় রবিউল গোপনাঙ্গে। এ আঘাতেই রবিউলের মৃত্যু হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহ আলম বলেন, ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জরুরী নির্দেশনায় সদর থানার এসআই হালিমকে লাইনে ক্লোজ করেছেন। পুরো ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এমআই