মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা সংবাদদাতা:
অপারেশনের জন্য প্রস্তুত অপারেশন থিয়েটার। সিরিয়ালে আছে রোগীরা। প্রস্তুত ডাক্তারও। সকাল থেকে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলে জানানো হয় এনেস্থেসিওলজিস্ট না আসায় অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। পরবর্তী কোনো দিন আসতে হবে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের এই দৃশ্য একদিনের নয়, নিত্য দিনই রোগীদের এভাবে হয়রানি ও দুর্ভোগে ফেলা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের অশোকা নামে এক ব্যক্তিকে মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট থেকে রেফার করা হয় অপারেশনের জন্য। সকালে তাকে অপারেশনের জন্য ওটিতে নেওয়া হয়। এনেস্থেসিওলজিস্ট রণজিৎ মন্ডল ও সার্জারি বিভাগের ডা. জেরিনের তত্ত্বাবধানে তার অপারেশন করার কথা থাকলেও সকাল গড়িয়ে বিকালে রোগীর স্বজনদের জানানো হয় অজ্ঞান করার ডাক্তার আসেনি। এখানে থাকলে আপনাদের রোগী বাঁচবে কিনা বলা যাচ্ছে না। আপনারা অন্য হাসপাতালে অপারেশন করাবেন নাকি কালকের জন্য অপেক্ষা করবেন? রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে শহরের সিবি হাসপাতালে নিয়ে রাতেই অপারেশন করানো হয়।
অপরদিকে, গত ২ এপ্রিল অপারেশন করার কথা ছিল শহরের বাঁকাল এলাকার ১৪-১৫ বছর বয়সী এক কিশোরের। হাটুর উপর থেকে ভেঙে যাওয়ার কারণে তাকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। সকালে তাকে অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানো হলেও কিছুক্ষণ পর পর জানানো হয় এনেস্থেসিওলজিস্ট নেই, আজ অপারেশন নাও হতে পারে। এক পর্যায়ে আবারো কেবিনে পাঠানো হয় রোগীকে। তাকে অপারেশনের দিন নির্ধারণ করা হয় আরো এক সপ্তাহ পরে। অন্যথায় প্রাইভেট ক্লিনিকে অপারেশন করানোর কথা জানানো হয় তার পরিবারকে।
হাসপাতালের স্টাফদের সাথে কথা বলে ও তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে কল দিলে ডাক্তাররা সেখানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আবার একটা অপারেশন মেডিকেলে না করিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে নিতে পারলে লাভের অংশ অনেক বেশি দেয়া হয় তাদের।
এনেস্থেশীয় ডাক্তারের অনুপস্থিতির কারণে অপারেশন করতে না পারা ডাক্তার জেরিনের সাথে কথা বললে তিনি মোবাইল ফোনে এ ব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে, এনেস্থেশীয় ডা. রণজিৎ মন্ডল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার না করেই তিনি সার্জারী বিভাগীয় প্রধানের সাথে কথা বলতে বলেন।
সার্জারী বিভাগীয় প্রধান শরিফুল ইসলাম সব ঘটনা শুনে নিজের অপারগতা প্রকাশ করে হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলতে বলেন।
তবে, এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. কুদরত-ই-খোদার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এমআই