আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রুশ বাহিনী রকেট ও বিমান হামলা চালাচ্ছে, এর ফলে প্রায় সারাক্ষণ দেশটিতে যুদ্ধের সাইরেন বাজছে। মাইকোলাইভ শহরে চলছে ক্রমাগত রকেট হামলা।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, হামলা চালিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা চলছে। সাধারণ নাগরিকদের ওপর মর্টার আর রকেট হামলা চলছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া মারিউপোলকে একেবারে মাটির সাথে গুড়িয়ে দিতে চায়। শহরের কিছুই যেন আর অবশিষ্ট নেই। রাশিয়া শহরটিতে প্রবেশ বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা করছে। তবে মারিউপোলে আত্মসমর্পণের জন্য রুশ আল্টিমেটামে সাড়া দেয়নি ইউক্রেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী দেনিস শেমহাল।
যদি মারিউপোলের পতন ঘটে, এটি হবে গত দুই মাসের যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজয়। মারিউপোল হচ্ছে আযভ সাগর অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বন্দর। এটি লৌহ এবং ইস্পাত শিল্পের বড় কেন্দ্র। ইউক্রেনের বেশিরভাগ ইস্পাত, কয়লা এবং শস্য এই বন্দর দিয়েই রফতানি করা হয়। এটি হারালে ইউক্রেনের অর্থনীতির জন্য সেটি হবে আরেকটি বড় আঘাত।
রাশিয়া যদি এই শহর দখল করতে পারে, তাহলে ক্রাইমিয়া থেকে রাশিয়া পর্যন্ত তারা একটি সরাসরি স্থল সংযোগ স্থাপন করতে পারবে। এটি হবে রাশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত এবং সামরিক বিজয়।
রাশিয়া দাবি করছে, তারা শহরটির বেশিরভাগ এলাকায় পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে মারিউপোলের আজভস্টল ইস্পাত কারখানা, যেটিকে ইউরোপের সবচেয়ে বড় ইস্পাত শিল্প বলে গণ্য করা হয়, সেটি এখনো তারা দখল করতে পারেনি। অবশিষ্ট ইউক্রেনিয়ান যোদ্ধারা সেখানেই আছে।
তবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণের উদ্দেশ্যে এবং দেশটির বিপজ্জনক জাতীয়তাবাদীদের বিরুদ্ধে।
এদিকে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অবরুদ্ধ শহর মারিউপোলের অবশিষ্ট ইউক্রেনিয়ান সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য রাশিয়া সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পরও এখনো তাতে কেউ সাড়া দেয়নি। মস্কো বলছে, ইউক্রেনিয়ান সেনাদের সবাই এখন এক বিশাল ইস্পাত কারখানার ভেতর অবস্থান নিয়েছে।
রাশিয়া আরো বলছে, মারিউপোল শহর এখন প্রায় পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে।
সময় জার্নাল/এলআর