সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
প্রস্তাবিত লকডাউনে ‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের সুপারিশ করেছেন মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। শনিবার বিকেলে ভার্চুয়াল বৈঠক করে তারা বেশকিছু কঠোর প্রস্তাবনা তৈরি করেন। পরে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া প্রস্তাবে রয়েছে :
লকডাউন চলাকালে আন্তঃজেলা যান চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। জেলা থেকে ঢোকা বা বের হওয়ার পথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেকপোস্ট বসানো হবে।
অনুমোদিত যেসব যানবাহন চলবে সেগুলোর ৫০ শতাংশ আসন খালি রাখতে হবে।
প্রয়োজন ছাড়া সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ওষুধ, মৃতদের দাফন, সিকিউরিটি গার্ডসহ জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য পেশার মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে পারবেন।
মসজিদ-মন্দিরসহ ইবাদতঘর খোলা থাকবে। তবে ন্যূনতম উপস্থিতি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রতি ওয়াক্তের নামাজে পাঁচজন এবং জুমার নামাজে ১০ জনের উপস্থিতির প্রস্তাব করা হয়েছে।
উন্মুক্ত জায়গায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচাকেনা করতে হবে।
বেসরকারি আর্থিক সেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়িসহ ব্যক্তিরা চলাচল করতে পারবেন।
ব্যাংক খাত কিভাবে পরিচালিত হবে- তার নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর বাইরে গণজমায়েত, সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসকে তিন ভাগের এক ভাগ জনবল নিয়ে কাজ করতে হবে।
শপিং মল, মার্কেটের সময় বেঁধে দেওয়া হতে পারে। অফিস-আদালতে কাজ করতে হবে এক-তৃতীয়াংশ জনবল নিয়ে। এ নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কোনো সরকারি কর্মচারীসহ বেসরকারি কর্মজীবীরাও তাঁদের কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। হাট-বাজার, শপিং মল সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, বিদ্যুৎ, পানি, ত্রাণ বিতরণ, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা, হাসপাতাল, কৃষিপণ্য, সার, বীজ, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, নার্স, চিকিৎসক, কেবল নেটওয়ার্ককর্মী, গণমাধ্যমকর্মীদের পরিবহন ও চলাচলে স্বাস্থ্যবিধি মানলে বাধা থাকবে না।
রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সব শিল্প-কারখানা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে চালু রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এরপর ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। তখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ২৩ মার্চ প্রথমবার ‘সাধারণ ছুটির’ ঘোষণা দেয় সরকার। শুরুতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে তা কয়েকদফা বাড়ানো হয়।
সে সময় সব অফিস-আদালত, কল-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ৩১ মের পর থেকে ধাপে ধাপে বিধি-নিষেধ শিথিল করতে থাকে সরকার। বছরের শেষে এসে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা ছাড়া আর সব কড়াকড়িই উঠে যায়।
সময় জার্নাল/ইএইচ