আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র আবার নতুন করে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এবার রাশিয়ার তিনটি টেলিভিশন স্টেশন নিষিদ্ধের পাশাপাশি গ্যাজপ্রোমব্যাংকের নির্বাহীদের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা। রোববার (৮ মে) ইউক্রেনে সামরিক হামলার জেরে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রুশ নাগরিকদের ব্যাংকিং সেবা দেওয়া নিষিদ্ধ করেছে ওয়াশিংটন। খবর রয়টার্স।
ইউক্রেনে সামরিক হামলা প্রতিহতের জন্য এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ বাড়ানোর সবশেষ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। জি৭ গ্রুপের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভার্চুয়াল বৈঠকের মধ্যে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
গ্যাজপ্রোমব্যাংক নির্বাহীদের বিরুদ্ধে এবারই প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার গ্যাস রফতানিকারক এই বিশালাকার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বরাবরই নিষেধাজ্ঞা এড়াতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা। রাশিয়ার গ্যাসের মূল ক্রেতা ইউরোপে সরবরাহ বিঘ্ন ঘটাতে পারে, তাই এমন পদক্ষেপ এড়াতে চেয়েছে তারা।
বাইডেন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা নয়। আমরা গ্যাজপ্রোমের সম্পদ জব্দ করছি না বা গ্যাজপ্রোমের সঙ্গে কোনো লেনদেন নিষিদ্ধ করছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যা ইঙ্গিত করছি তা হচ্ছে,
গ্যাজপ্রোমব্যাংক কোনো নিরাপদ আশ্রয়স্থল নয় এবং আমরা তাদের কিছু শীর্ষ ব্যবসায়িক নির্বাহীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি যেন একটি শীতল প্রভাব তৈরি হয়।’
এদিকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে রাশিয়া থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন। তবে ইউরোপের অর্থনীতির ওপর ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করে রাশিয়ার গ্যাস খাতকে এবারও অবরোধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে এ পর্যন্ত ৫ দফায় মস্কোর ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে ইউরোপীয় দেশগুলো। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাকে ইউক্রেন অভিযান থেকে বিরত রাখার পাশাপাশি রাশিয়ার সামরিক সামর্থ্যকে হ্রাস করাও ছিল এসব নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য। তবে এসব নিষেধাজ্ঞায় টলেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। উল্টো বাড়িয়েছেন আক্রমণের তীব্রতা। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ইইউ।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে আরও ১৬০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তার ঘোষণা
এদিকে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে সাত শিল্পোন্নত দেশের সংগঠন জি৭। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, তারা রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীলতা ধাপে ধাপে কমিয়ে আনবেন। ইউক্রেনে চলমান সংঘাতের মধ্যে রোববার (৮ মে) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজিত এক সভায় এ ব্যাপারে একমত হন তারা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এ অভিযানের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো।
সময় জার্নাল/ইএইচ