আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভে পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। এর আগে এক বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, দেশের জন্য যে কোনো আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। শ্রীলঙ্কান গণমাধ্যম ডেইলি মিরর অনলাইনের এক প্রতিবেদনে তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, কিছু সময় আগেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে ফের কারফিউ জারি করা হয়েছে। এর মধ্যেই তার পদত্যাগের খবর সামনে এলো। রাজধানী কলম্বো এবং দেশের অন্যান্য শহরে সরকারপন্থি লোকজনের সঙ্গে সরকারবিরোধীদের সংঘর্ষ চলছে। সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ দিন দিন আরও জোরালো হওয়ায় গোতাবায়া রাজাপাকসে সরকারের শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের চাপ বাড়তে শুরু করে।
এর আগে গত শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে জানিয়েছিলেন যে, তার ভাই অর্থাৎ দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মতি জানিয়েছেন।
অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা সংকটে জর্জরিত দেশটিতে অনেকদিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের অনুরোধ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তবে প্রেসিডেন্ট নিজেও পদত্যাগের চাপে রয়েছেন। কারণ শুরু থেকেই প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছে সাধারণ মানুষ।
প্রেসিডেন্টের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। কলম্বো পেজের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গোতাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্ট হাউজে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে মাহিন্দা রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে রাজি হন।
শ্রীলঙ্কায় সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। নির্বাচনকে সামনে রেখে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। এটাকে তখনকার সরকার নির্বাচনী কৌশল হিসেবেই ধরে নিয়েছিল।
গত ২০ বছরের মধ্যে ১২ বছরই শ্রীলঙ্কার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেছেন রাজাপাকসে পরিবারের সদস্যরা। এসময় তারা স্বৈরতন্ত্রের তকমা পেয়েছেন। এর আগে তার ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তার অন্য দুই ভাই দেশটির বন্দর ও কৃষি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছেন। এভাবে পাকসে পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য সরকারের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
সময় জার্নাল/এলআর