আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শ্রীলঙ্কায় সামরিক বাহিনী ও পুলিশের হাতে জরুরি ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়েছে। এই ক্ষমতার ফলে তারা যেকোনো লোককে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করতে পারবে। সোমবার সহিংসতায় সাতজন নিহত এবং অন্তত ২০০ লোক আহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো। সহিংসতার কারণে প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে তার পদত্যাগেও সহিংসতা বন্ধ হয়নি। ক্ষুব্ধ জনতা তারসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী হেনস্থার শিকারও হয়েছেন। বিক্ষোভকারীর প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের পদত্যাগ দাবি করছে।
শ্রীলঙ্কার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসে প্রাণ বাঁচাতে ত্রিঙ্কোমালির নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার ভোররাতে ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে তার বাসভবন থেকে সরিয়ে নেয় সেনাবাহিনী। তবে বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোতে নতুন করে সহিংসতা না হলেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার সকালে রাজপাকসের সরকারি বাসভবন ঘিরে ফেলে বিক্ষোভকারীরা। তারা কলম্বোর টেম্পল ট্রিজ নামের বাসভবনের মূল দোতলা ভবনে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিল। রাজাপাকসে ও তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা সেখানেই অবস্থান করছিলেন। এ সময় বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য রাজপাকসের বাসভবনে পৌঁছে সপরিবার তাকে উদ্ধার করে। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের গেট ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভোরেই সপরিবার রাজাপাকসেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে খোলসা করেননি তিনি। যদিও সূত্রের খবর, ত্রিঙ্কোমালিতে নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন রাজাপাকসে।
এর আগে জনতা হাম্বানতোতায় রাজাপাকসাদের পৈত্রিক বাসভবনটি জ্বালিয়ে দেয়।
শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটার অর্জুন রানাতুঙ্গে বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন মানুষ। কিন্তু তাদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হলো তা অপ্রত্যাশিত। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। বিভোক্ষকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেনি। যদি ঠিক মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হতো, তা হলে এই ঘটনা ঘটত না।
সোমবারে ঘটনার পর থেকেই থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে রাজধানী কলম্বোতে। ওই দিন কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছিল হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। দোকান, বাড়ি, সরকারি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। হামলা চালানো হয় সরকারপক্ষের এমপি এবং নেতাদের বাড়িতে।
এদিকে বিক্ষোভকারী এবং শ্রীলঙ্কার ধর্মীয় নেতারা রাজাপাকসের পরিবারের সমর্থকদের বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানোর জন্য উস্কানি দেয়ার জন্য দোষারোপ করেন। তারা বলেন, ওই হামলার জন্যই প্রতিশোধমূলক হামলার জন্ম নিয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর