সর্বশেষ সংবাদ
আদালত প্রতিবেদক :
আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার বাংলাদেশী বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন শিশু দুটির মা নাকানো এরিকো।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ আবেদন করা হয়েছে। আদালত আবেদনটি শুনানির জন্য আগামী সোমবার দিন ধার্য করেছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে দুই শিশু মা নাকানো এরিকোর সঙ্গে বারিধারায় থাকবেন। বাবা শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এ নির্দেশনা অমান্য করে ইমরান শরীফ জোর করে মাঝে মাঝেই শিশুদের নিয়ে বাইরে যান। এ কারণে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি।
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে বলে রায় দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি এ বিষয়ে দেয়া হাইকোর্টের রায় বাতিল করা হয়।
এই সময়ে নাকানো এরিকো শিশুদের নিয়ে দেশত্যাগ করতে পারবেন না। বাবা ইমরান শরীফ শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলে রায়ে বলা হয়।
উল্লেখ্য: ২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে সেরে টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। তারা তিনজনই টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী ছিল।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান-এরিকোর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ২১ জানুয়ারি ইমরান আমেরিকান স্কুল ইন জাপান কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এতে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপর একদিন জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা স্কুল বাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে ইমরান তাদের অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।
গত ২৫ জানুয়ারি শরীফ ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছ থেকে মেয়েদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো ওই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে মেয়েদের নিজ জিম্মায় পেতে আদেশ চেয়ে গত ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি মেয়েদের সঙ্গে এরিকোর সাক্ষাতের অনুমতি দিয়ে আদেশ দেন।
কিন্তু ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়েকে সাক্ষাতের সুযোগ দেন। এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে’ ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে তিনি দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে তাদের মা এরিকোর জিম্মায় হস্তান্তরের আদেশ দেন। তবে দুই মেয়ে বাংলাদেশে থাকায় বিষয়টি নিয়ে তিনি বাংলাদেশের একজন মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। এরপর গত ১৮ জুলাই তিনি শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন।
বাংলাদেশে এসে এরিকো করোনা পরীক্ষা করালে তার রিপোর্ট নেগেটিভ থাকার পরেও ইমরান ওই রিপোর্ট অবিশ্বাস করে সন্তানদের সঙ্গে তাকে সাক্ষাতে অস্বীকৃতি জানান। গত ২৭ জুলাই এরিকোর মোবাইল সংযোগ বন্ধ করে চোখ বাঁধা অবস্থায় মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়। এ অবস্থায় দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো।
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল