দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুললিত কন্ঠে, হারমোনিয়াম বাজিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মে) গোপালগঞ্জ সার্বজনীন কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি সংলগ্ন নাফকো শপিং কমপ্লেক্স এর নিচে বসে বিকাল বেলায় গান গাচ্ছিলেন অসহায় অন্ধ প্রতিবন্ধী ইবাদ আলী খান (৬৫)। গাইছিলেন কপাল পোড়া জনম দুখী আমি একজনা...., পোষাপাখি উড়ে যাবে সজনী একদিন ভাবি নাই মনে......।
এ গান গেয়ে দর্শকদের মন মাতালেন। শিল্পীর বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কুশলী ইউনিয়নের কুশলী গ্রামে। জানা যায়, ইবাদ আলী খান জন্ম থেকেই অন্ধ প্রতিবন্ধী এবং তার ডান হাত এর অর্ধেক নেই। পথে পথে, অলিতে গলিতে, হাট বাজারে, গান গেয়ে ভিক্ষা করেন তিনি। এভাবেই দুই মেয়ে তিন ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালান তিনি।
গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ৩০ বছর ধরে অবিরাম গান গেয়ে চলছেন। এর আগে তিনি খুলনা গান গেয়েছেন। জীবন যুদ্ধে তার ভান্ডারে রয়েছে শুধুমাত্র গান আর গান। তিনি ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, লালন সঙ্গীত, ভারতীয় বিভিন্ন শিল্পীর বাংলা গানও গান। বলা যায়, সব ধরনের গানই তিনি গাইতে পারেন।গান গাওয়ার সময় ভক্তরা খুশি হয়ে ৫ টাকা ১০ টাকা করে দিয়ে যায়।
প্রতিদিন দুই থেকে তিনশত টাকায় রোজগার করেন তিনি। ইবাদ আলী খান বলেন, অন্ধ প্রতিবন্ধী আমি। ৬৫ বছর জীবনে কারো কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই পথে পথে গান গেয়ে ৭ সদস্যের সংসার চালাচ্ছি। আক্ষেপ করে তিনি আরো বলেন অনেক সাংবাদিক আমাকে নিয়ে টেলিভিশনে পত্রিকায় নিউজ করেছেন। লাইভ প্রোগ্রামে আকে দেখিয়েছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন ফল পাইনি। এখন আর মিডিয়ায় নিউজ করা নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই।
জেলা কালচারাল অফিসার মামুন বিন সালেহ বলেন, ইবাদ আলী খান দীর্ঘদিন ধরে গোপালগঞ্জের মানুষকে গান গেয়ে শোনাচ্ছেন। বিভিন্ন রকম গান গেয়েই জীবন জীবিকা চলে তার। অসহায় অন্ধ প্রতিবন্ধী এই শিল্পীর বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের সাহায্য করা উচিৎ। এছাড়াও তাকে সরকারীভাবে সাহায্য সহযোগিতা করা দরাকার।
সময় জার্নাল/এলআর