ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরে মৃত্যু ঘটানোর প্রস্তুতি গ্রহণ সংক্রান্ত মামলার আসামি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সুমনা সরকারকে (৪৫) ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলজার রহমান নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এই আদেশ দেন। আদালত চলাকালে এজলাসে বসে মুঠোফোনে ওসিকে এই নির্দেশ দেয়া হয়।
অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্রে জানা যায়,গত বছর ৫ অক্টোবর নাটোর জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অজিত কুমার বিশ্বাস বাদি হয়ে সুমনা সরকারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মৃত্যু ঘটনানোর প্রস্তুতি নেয়ার অভিযোগে দায়ের করা এই মামলাটি দুই দফা তদন্ত হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালত মামলার আসামি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সুমনা সরকার, (৪৫) তঁার বোন একই হাসপাতালের চিকিৎসক কর্মকর্তা সাগোরিকা সরকার (৩০), মা করুনা রানী সরকার (৫৫) বাবা সুনিতী রঞ্জন সরকার (৬০) ও সহযোগী মো.মাসুমের (৫০) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা দেন। গত ২০ এপ্রিল আদালতের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নাটোরের পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানো হয় (স্মারক নং-২১৭,তাং-২০.৪.২২) । কিন্তু সদর থানা আসামিদের গ্রেপ্তার করে না। গত ২০ মে মামলার বাদি থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করার অনুরোধ করে আসেন। তবুও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয় না।
আজ বুধবার মামলাটির ধার্য্য তারিখ ছিল। আদালতে মামলাটি উঠলে বাদির আইনজীবী আদালতকে জানান,আসামি সুমনা সরকার ও সাগোরিকা সরকার সরকারি চিকিৎসক। তঁারা সদর থানা ভবনের অদূরেই হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই শহরেই তারা বিচরণ করেন। অথচ পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে না। বাদি পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানী শেষে আদালত এজলাসে বসেই সদর থানার ওসিকে ফোন দেন। তিনি বাদির অভিযোগ শোনান। বিচারক আগামি ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করাতে বলেন। অন্যথায় এ ব্যাপারে আদেশের অনুলিপি ডিআইজি ও আইজিপি বরাবর পাঠানো হবে বলেও হুশিয়ার করে দেন। একই সাথে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমীন তালুকদারসহ বাদির আইনজীবীদেরকে নাটোরের পুলিশ সুপারকে অবহিত করার পরামর্শ দেন।
বাদির নিযুক্ত আইনজীবী আলী আজগর জানান,আসামিরা সমাজের প্রভাবশালী ব্যাক্তি হওয়ায় হয়তো পুলিশ গ্রেপ্তারী পরোয়ানা তামীলে বিলম্ব করছেন। আমরা বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছি। আদালত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমরা সন্তুষ্ট।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ জানান,গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করার জন্য তিনি উপ পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি ছুটিতে থাকায় দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। আজ ছুটি থেকে তার ফেরার কথা রয়েছে। তিনি আদালতের আদেশ কার্যকর করা হবে বলে জানান।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারি পরিচালক পরিতোষ চন্দ্র জানান,সুমনা সরকার সদর হাসপাতালে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তার বোন সাগরিকা সরকার সম্প্রতি অন্যত্র বদলি হয়েছেন। তিনি গ্রেপ্তারী পরোয়ানা সম্পর্কে কিছু জানেন না।
সময় জার্নাল/এলআর