দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ঠিকাদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়টির মাঠ ভরে রাখা হয়েছে ইট খোয়াসহ নানা ধরণের নির্মাণ সামগ্রী। প্রতিদিনই মেশিন দিয়ে এসব ইট ভাঙ্গা হচ্ছে।
যার ফলে বিপাকে পড়েছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে এলাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে জানাগেছে, উপজেলার নাগরা-বান্ধাবাড়ি- রাশমীল সড়ক নির্মাণ কাজের সামগ্রী রাখার জন্য বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটি ঠিকাদারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিনিময়ে ওই ঠিকাদার ৭লক্ষ টাকা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মোঃ কামাল হোসেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয় ও বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রয়েছে। এই দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই মাঠটিতে খেলাধুলা করে। মাঠটিতে নির্মাণ সামগ্রী রাখার কারণে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। আর বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মেশিন দিয়ে ইট ভাঙ্গার কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণেও সমস্যা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিদ্যালয় মাঠে ইট খোয়া রাখার কারণে আমরা খেলাধুলা করতে পারছিনা। এছাড়া বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মেশিন দিয়ে ইট ভাঙ্গা হয়। যার ফলে আমাদের ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের যে মাঠটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে সেটি আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ব্যবহার করেনা। ওই মাঠটি আমাদের হলেও বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে।
তিনি আরো বলেন, মাঠটিতে কিছু দিনের জন্য নাগরা-বান্ধাবাড়ি- রাশমীল সড়ক নির্মাণ কাজের সামগ্রী রাখার জন্য মোঃ জসিমউদ্দীন নামে এক ঠিকাদারের কাছে ৫০ হাজার টাকা ও ১টি সিসি টিভি মনিটরের বিনিময়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখানে ৭ লক্ষ টাকার বিষয়টি ভিত্তিহীন।
বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক সবুজ ঘরামী বলেন, আমরা শুনেছি ঠিকাদারের কাছ থেকে বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হান্নান মোল্লা ও প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদ ৭লক্ষ টাকা নিয়েছেন। এই অর্থের বিনিময়ে মাঠ ভাড়া দেওয়ার কারণে বিদ্যালয় দুটোর শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
ঠিকাদার মোঃ জসিমউদ্দীন বলেন, আমি ৩মাসের জন্য মাঠটি ভাড়া নিয়েছি। বিনিময়ে বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা ও ১টি সিসি টিভি মনিটর দিতে হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ ভাড়া দেওয়ার কোন বিধান নেই। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সময় জার্নাল/এলআর