আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফেসবুকের (মেটা) দ্বিতীয় সবচেয়ে ক্ষমতাধর নির্বাহী শেরিল স্যান্ডবার্গ পদত্যাগ করেছেন। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির সাথে তার ১৪ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটল। তার এই সিদ্ধান্তে সিলিকন ভ্যালিতে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। সেইসাথে ফেসবুকের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার পদত্যাগ ঘোষণার পর মেটার শেয়ারের দর ২ ভাগ পড়ে যায়।
স্যান্ডবার্গকে (৫২) সিলিকন ভ্যালির অন্যতম প্রভাবশালী নারী বিবেচনা করা হয়। আর ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গের পর তিনিই ছিলেন কোম্পানির সবচেয়ে ক্ষমতাধর নির্বাহী।
স্যান্ডবার্গ বৃহস্পতিবার ভোরে তার ফেসবুক পেইজে চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে তার পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। তবে তিনি প্যারেন্ট কোম্পানি মেটার বোর্ডে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
তার এই সিদ্ধান্তের পর সিইও মার্ক জাকারবার্গ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, তিনি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। ব্যক্তিগত ও পেশাগত- উভয় দিকেই আমার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তিনি ছিলেন।
এমন এক সময় তিনি ফেসবুক ছাড়ছেন, যখন মেটার বিজ্ঞাপন বিক্রি কমে গেছে। টিকটকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ফেসবুকের প্রতিযোগিতা বেড়েছে। মার্কিন প্রযুক্তি শিল্পের উচ্চ-পদস্থ নারী কর্মকর্তাদের একজন ছিলেন শেরিল স্যান্ডবার্গ। ফেসবুকের দ্বিতীয় প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হতো তাকে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে যখন আমি এখানে চাকরি নিই, তখন ভেবেছিলাম, পাঁচ বছর এই ভূমিকায় থাকব। কিন্তু ১৪ বছর পর আমার জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের কথা লিখতে হচ্ছে।
মেটায় তার স্থলাভিষিক্ত হবেন কোম্পানিটির বর্তমান প্রবৃদ্ধি কর্মকর্তা জ্যাভিয়ার ওলিভান। স্যান্ডবার্গের স্বামী ২০১৫ সালে মারা যান। চলতি গ্রীষ্মে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। শরতে তিনি ফেসবুক ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তবে কোম্পানির বোর্ডে থেকে যাবেন।
তার এই ঘোষণার পর মেটার শেয়ার চার শতাংশ পড়ে গেছে। স্যান্ডবার্গ যখন ফেসবুকে যোগ দেন, তখন এটি ছিল ছোট একটি প্রতিষ্ঠান। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়া ২৩ বছর বয়সী মার্ক জুকারবার্গ সামাজিকমাধ্যমটি চালাতেন।
এরআগে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলকে বিজ্ঞাপনের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন স্যান্ডবার্গ। তখন ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। গেল বছর এগারো হাজার ৭০০ মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করে ফেসবুক। এটির একটি অ্যাপে দৈনিক বৈশ্বিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২৮০ কোটি।
‘লিন ইন: ওম্যান, ওয়ার্ক, অ্যান্ড দ্য উইল টু লিড’ ও ‘অপশন বি’ নামের দুটি বই লিখে বিশ্বজুড়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের রাজনৈতিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হস্তান্তরের ঘটনায় তার এই তারকাখ্যাতি বিবর্ণ হয়ে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে তাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর