আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মারিউপোলের একটি বিধ্বস্ত ভবন থেকে শ্রমিকরা অসংখ্য লাশ উদ্ধার করেছে। অন্যদিকে বুধবার দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইউক্রেনের অবরুদ্ধ বন্দর দিয়ে শস্য রফতানি করতে না পারার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা বেড়েছে।
মারিউপোল শহরের মেয়রের সহকারী পেট্রো অ্যান্ড্রুশচেঙ্কো জানান, মারিউপোলের অনেক বিল্ডিংয়ে শ্রমিকরা ৫০ থেকে ১০০টি করে লাশ খুঁজে পাচ্ছেন।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ অনুমান করেছে, কয়েক মাসের টানা অবরোধের কারণে মারিউপোলের কমপক্ষে ২১ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান বাহিনী বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের সেভেরোদোনেৎস্কের কেন্দ্রস্থল ডনবাস নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচণ্ড লড়াই করেছে।
যুদ্ধ যতই দীর্ঘস্থায়ী হয়, এর মানবিক সঙ্কটও ততই বাড়তে থাকে। যুদ্ধের ফলে পূর্ব ইউরোপের বাইরেও খাদ্য সঙ্কট বাড়ছে। এছাড়া সরবরাহকৃত খাদ্যের দামও কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
ইউক্রেন ‘ইউরোপের রুটির ঝুড়ি’- হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও গম, ভুট্টা ও সূর্যমুখী তেলের বিশ্বের বৃহত্তম রফতানিকারকদের মধ্যে অন্যতম এ দেশ। তবে যুদ্ধ ও কৃষ্ণ সাগর উপকূলে ইউক্রেনের বন্দরে রাশিয়ার অবরোধের কারণে খাদ্য রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটিতে আনুমানিক ২২ মিলিয়ন টন শস্য মজুদ রয়েছে। এসব শস্য রফতানি না করতে পারায় অনেক উন্নয়নশীল দেশে, বিশেষ করে আফ্রিকাতে খাদ্য সরবরাহকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বুধবার সাগরে একটি নিরাপদ করিডোর তৈরির ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘের এক প্রস্তাবে সমর্থন প্রকাশ করেছে রাশিয়া। এর ফলে ইউক্রেন পুনরায় শস্য রফতানি শুরু করতে পারবে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল বুধবার ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে ‘খাদ্য সরবরাহকে বাধাগ্রস্ত করার’ অভিযোগ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম শস্য রফতানিকারক দেশ রাশিয়া অভিযোগ করছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার জন্য ক্রমবর্ধমান খাদ্য সঙ্কট দায়ী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালানোর দায় সম্পূর্ণ রাশিয়ার।
মস্কো বলছে, এসব বিধিনিষেধগুলোর কারণে শস্য রফতানির জন্য তাদের জাহাজগুলো ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যান্য শিপিং সংস্থাগুলোও তাদের পণ্য বহন করতে ইচ্ছা পোষণ করছে না।
তুরস্ক যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং শস্যের চালান পুনরায় শুরু করার জন্য আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখতে চাচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর