রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
টানা বর্ষন ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বসতবাড়ীতে পানি উঠায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা। অনেক পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিলেও তালিকা তৈরী না হওয়ায় ত্রান তৎপরতা শুরু করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। অন্যদিকে কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ধরলা, ব্রহপুত্র, ধরলা, দুকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত চার দিন ধরে রৌমারী উপজেলার সীমান্ত ঘেষা নদী জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানির পানি বৃদ্ধির ফলে বন্দী জীবন যাপন করছে রৌমারীর চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। উজানের পাহাড়ী ঢলের লালচে কাদা পানিতে মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে। দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদী পশু পাখিরও।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে রৌমারী উপজেলায় প্রায় ২শ ২৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। কাদামাখা পানিতে তলিয়ে থাকা উঠতি আউশ ধান, পাট, মরিচ, কাউন ও তিলসহ বিভিন্ন সবজি জাতীয় ফষল সম্পুর্ন রুপে ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষক।
রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের কৃষক সেফাত উল্ল্যা জানান, আমার কাউন ক্ষেত, সবজি ক্ষেত ৪ দিন ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। সদর ইউনিয়নের বাওয়াইর গ্রামের ছপিয়াল হক জানান, চারদিকে বন্যার পানি থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করছেন।
যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন, গত ৪ দিন ধরে পানি বন্দি অবস্থায় থাকলেও এখনও কোন সহায়তা পাননি তারা। যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, তালিকা দেয়া হয়েছে কিন্তু সরকারি ভাবে এখনো কোন বরাদ্দ পাই নাই। বরাদ্দ পেলে তা বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
অন্যদিকে উপজেলার ২২ কিলো পাকা ও ৩৫ কিলোমিটার কাচা সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় যাতায়াত করছেন বন্যা কবলিতরা। রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী জোবায়েত হোসেন জানান, বন্যার পানি নামার সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা দ্রুত মেরামত করা হবে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল জানান, উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত এখনও প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। সব কিছুই প্রস্তুত আছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলেই ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।
সময় জার্নাল/এলআর