সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাল ডেস্ক: শ্রয়কেন্দ্রের বারান্দায় বসে আছেন বৃদ্ধা ছায়ারুল বেগম।অস্থায়ী একটি আশ্রয়কেন্দ্রের বারান্দার দেয়ালে হেলান দিয়ে মেঝেতে বসেছিলেন ছায়ারুল বেগম। পরনের শাড়ি ভেজা। সঙ্গে ছোট্ট একটা কাপড়ের পোঁটলা। ভেজা কাপড়ে কাঁপছিলেন। তাঁর ভাষ্য, বয়স ১০০ পেরিয়েছে।বৃদ্ধা ছায়ারুল ফেঞ্চুগঞ্জের উত্তর কুশিয়ারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় আশ্রয়ের খোঁজে এসেছেন। বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষে বন্যার্তরা অবস্থান করছেন। তাঁকে কোনো কক্ষে আশ্রয় দেওয়া হয়নি।বয়সের ভারে নুয়ে পড়া ছায়ারুলের কথা ছিল অস্পষ্ট। পাশাপাশি সিলেটের আঞ্চলিকতার টান থাকায় বুঝতে সমস্যা হচ্ছিল। অগত্যা সাহায্য নিতে হলো অন্য আরেকজন নারীর। সুমি বেগম নামের ওই নারীও আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। অস্পষ্ট আর কাঁপা স্বরে ছায়ারুল বলেন, ‘গত কাইলকর রাইতর তুফানো ঘরো কোমর হিমা পানি অই যায়। বাদে ফুরির ঘরর নাতনিয়ে আমারে নৌকাত তুলি দিছে। নাওর মাঝি এর বাদে আমারে রাস্তাত লামায় দিছোইন।’রাস্তার নামার পর স্থানীয় লোকজন ছায়ারুলকে আশ্রয়কেন্দ্র দেখিয়ে দেন। প্রায় আধা কিলোমিটার দূরের একটি বাজার থেকে পায়ে হেঁটে আশ্রয়কেন্দ্রে যান তিনি। আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে বাধে বিপত্তি। সামনে হাঁটুর বেশি পানি ছিল। তাই কেন্দ্রের ভেতরে ঢোকার কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না ছায়ারুল বেগম। পরে সাজু নামের একজন নৌকায় করে তাঁকে বিদ্যালয়ের বারান্দা পর্যন্ত নিয়ে যান। নতুন করে কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে ফেঞ্চুগঞ্জের অনেক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। দুপুরে সময় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা বিদ্যালয়ে ত্রাণ নিয়ে যান। তবে ছায়ারুলের নাম ওই বিদ্যালয়ের বন্যার্ত মানুষের তালিকায় ছিল না। ত্রাণের খিচুড়ি নেওয়ার মতো কোনো পাত্রও ছিল না তাঁর। পরে এক নারী তাঁকে একটি স্টিলের গামলা দেন। স্বেচ্ছাসেবকেরা ওই গামলায় তাঁকে খিচুড়ি দিয়ে যান। ছায়ারুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর গ্রামের বাড়ি পাঠানচর এলাকায়। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। ছায়ারুলের চার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কেউ তাঁর খোঁজ নেন না। তবে মেয়ের ঘরের এক নাতনি তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিল। বন্যায় নাতনির ঘরে এখন কোমরসমান পানি। কোনো কাজ করার সামর্থ্য নেই ছায়ারুলের। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চেয়েচিন্তে খান। তাতে কোনো দিন খাবার জোটে, কখনো অনাহারে থাকতে হয়। বিদ্যালয়ের দপ্তরি হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, সব কক্ষে মানুষ। মোট ৭২টি পরিবার ওই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। ছায়ারুলেরও থাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু সঙ্গে কেউ না থাকায় এবং বয়স্ক হওয়ায় কোনো কক্ষের কেউ তাঁকে সঙ্গে নিতে চাচ্ছেন না বলে জানান হেলাল উদ্দিন। এসএম
এ বিভাগের আরো
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল