আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
মাঙ্কিপক্সকে বৈশ্বিক জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে ঘোষণা করা হবে কিনা তা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকে বসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই রোগটি পশ্চিমা দুনিয়ায় আঘাত করার পরেই শুধু এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা মহামারির সময় ধনী ও গরিব দেশগুলোর মধ্যে যেমন বৈষম্য দেখা দিয়েছিল, এক্ষেত্রেও সেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। যদি ডব্লিউএইচও আজ মাঙ্কিপক্সকে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করে, তাহলে তার অর্থ হবে জাতিসংঘের এই এজেন্সি রোগটিকে ‘ব্যতিক্রমী ইভেন্ট’ হিসেবে গণ্য করছে। একই সঙ্গে এই রোগ সীমান্ত অতিক্রম করে আরও দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। এ খবর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দ্য অলিম্পিয়ান।
এতে বলা হয় মাঙ্কিপক্সকে যদি বৈশ্বিক ইমার্জেন্সি হিসেবে ঘোষণা করা হয় তাহলে এর অর্থ হবে কোভিড-১৯ মহামারিকে যেভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এটিও সেভাবেই চিহ্নিত হবে। তবে মহামারি কমাতে এমন ঘোষণা সহায়ক হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেক বিজ্ঞানী।
গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস সাম্প্রতিক মাঙ্কিপক্স কমপক্ষে ৪০টি দেশে শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এর মধ্যে ইউরোপে যেসব রোগ দেখা দিয়েছে তা খুব বেশি অস্বাভাবিক ও উদ্বেগজনক। কেন্দ্রীয় ও পশ্চিম আফ্রিকায় দশকের পর দশক ধরে এই রোগ আক্রান্ত করে যাচ্ছে মানুষকে। এসব দেশে মাঙ্কিপক্সের একটি সংস্করণে শতকরা কমপক্ষে ১০ ভাগ মানুষ মারা গেছেন।
এখন পর্যন্ত আফ্রিকার বাইরে মাঙ্কিপক্সে কোনো মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। নাইজেরিয়ার ভাইরাসবিষয়ক বিশেষজ্ঞ অয়িওয়ালে তোমোরি বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বাস্তবেই উদ্বিগ্ন হতো, তাহলে অনেক বছর আগেই ২০১৭ সালে যখন নাইজেরিয়ায় নতুন করে মাঙ্কিপক্স দেখা দেয়, তখনই তো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি কমিটি বৈঠক আহ্বান করতে পারতো। কেউই জানেন না কেন আকস্মিকভাবে শত শত মানুষ আক্রান্ত হলেন। কৌতুহলের বিষয় হলো, যখন এই রোগ পশ্চিমা দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে শুধু তখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের বিশেষজ্ঞদের বৈঠক আহ্বান করেছে।
বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের জেনেটিক পরিবর্তনের বড় কোনো ইস্যু খুঁজে পাননি। গত মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন শীর্ষস্থানীয় উপদেষ্টা বলেছেন, ইউরোপে এই রোগ যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে মনে হচ্ছে যৌনতার মধ্য দিয়ে ছড়ায় এই ভাইরাস। বিশেষ করে সমকামী, উভকামীদের মধ্যে। এমনটা দেখা গেছে স্পেন ও বেলজিয়ামে।
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন নিশ্চিত করেছে যে, কমপক্ষে ৪২টি দেশে কমপক্ষে ৩৩০০ জন মানুষ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ইউরোপে। অন্যদিকে এ বছর আফ্রিকায় আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪০০ মানুষ। এর মধ্যে ৬২ জন মারা গেছেন।
এমআই