নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ নির্মাণের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করেছেন।
বিজনেস ইনকিউবেটর, যার স্টার্টআপ এবং ব্যবসার জন্য একটি সম্পূর্ণ উদ্ভাবনী ইকো-সিস্টেম রয়েছে, যা প্রায় ২২০ উদ্যোক্তা, প্রশিক্ষণার্থী, ফ্রিল্যান্সার এবং সম্ভাব্য স্টার্টআপকে মেন্টরশিপের পাশাপাশি আর্থিক ও লজিস্টিক সার্ভিস প্রদান করবে।
প্রধানমন্ত্রী চুয়েট ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের নামানুসারে ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা আজ বুধবার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ইনকিউবেটরের লক্ষ্য আইটি উদ্যোক্তাদের বিকাশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতি সম্প্রসারণ করা। দেশে ইতোমধ্যেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শিল্পের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অন্যতম চাবিকাঠি হবে। কারণ, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্নাতকদের দ্বারা উদ্ভাবিত নতুন ধারণাগুলোকে বাস্তবায়িত করার কেন্দ্র এবং সেই সাথে মেধা, বুদ্ধি এবং জ্ঞানের বিবর্তন কেন্দ্র হবে।
ইনকিউবেটরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইটি শিল্পের মধ্যে কার্যকর যোগসূত্র স্থাপনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি করতে সহায়তা প্রদানের দিকেও মনোযোগ দেয়।
চুয়েট ক্যাম্পাসে ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ দশমিক ৭ একর জায়গার উপর নির্মিত এটি হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রচারাভিযান থেকে দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ রূপান্তর করার নতুন ধাপ, যা ২০০৮ সালে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রথম উন্মোচন করা হয়েছিল।
ইনকিউবেটরে বিটিসিএলের মাধ্যমে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত বাস্তবায়িত এই অনন্য প্রকল্পে ৫০ হাজার বর্গফুট জায়গাসহ ১০ তলা পর্যন্ত একটি ডিম্বাকৃতি ইনকিউবেশন বিল্ডিং অন্তর্ভুক্ত। প্রতিটি ফ্লোরে ৫ হাজার বর্গফুট আছে।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ জামাল ও রোজী জামালের নামে দুটি পৃথক চারতলা ডরমেটরিও উদ্বোধন করেন। ভবন দুটির মোট আয়তন ৪০ হাজার বর্গফুট এবং প্রতিটি ডরমেটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে। এছাড়াও, একটি ৬ তলা বহুমুখী প্রশিক্ষণ ভবন রয়েছে, যার মোট ফ্লোর এলাকা ৩৬ হাজার বর্গফুট। প্রতিটি ফ্লোর ৬ হাজার বর্গফুটের।
ইনকিউবেশন ভবনটিতে একটি স্টার্টআপ জোন, ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেনস্টর্মিং জোন, একটি এক্সিবিশন সেন্টার, একটি ই-লাইব্রেরি জোন, একটি ডেটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, ভিডিও কনফারেন্সিং রুম এবং একটি কনফারেন্স রুম রয়েছে।
এছাড়াও ব্যাংক এবং আইটি ফার্ম, সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, ডিসপ্লে জোন এবং মিডিয়া রুমগুলোর জন্য আলাদা কর্নার থাকবে। আরো রয়েছে বহুমুখী প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জন ধারণ ক্ষমতার একটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম এবং ৫০ জন ধারণ ক্ষমতার চারটি কম্পিউটার/সেমিনার কক্ষ।
একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাবস্টেশন এবং একটি সোলার প্যানেলও স্থাপন করা হচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর