স্পোর্টস ডেস্ক:
প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং ব্যর্থতা শেষ ম্যাচে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছেন লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন। পুরোপুরি টি-টোয়েন্টি সুলভ না হলেও তাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছিলো বাংলাদেশ। ব্যাটারদের দেয়া এই পুজি নিয়ে খুব একটা লড়াই করতে পারলেন না বাংলাদেশের বোলাররা । গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে পেসারদের জন্য কিছুই ছিল না। মোস্তাফিজ শরিফুল ৩ ওভার বল করে দিয়েছেন ৪০ রান। ক্যারিবীয়দের যে ৫টি উইকেট পরেছে, তার সবগুলোই নিয়েছেন স্পিনাররা।
নাসুম আহমেদ, মাহদি হাসান কিংবা সাকিব আল হাসানরা চেপে ধরার চেষ্টা করলেও নিকোলাস পুরান এবং কাইল মায়ার্সের ব্যাটে ঠিকই সহজ জয় তুলে নিয়ে মাঠ ছাড়লো স্বাগতিক ক্যরিবীয়রা।
১০ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের ব্যবধানে অনায়াস জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা। সে সঙ্গে ৩ ম্যাচের সিরিজটাও তারা জয় করে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। প্রথম ম্যাচ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল ৩৫ রানের ব্যবধানে।
প্রথম দুই ম্যাচে টস হারা বাংলাদেশ এই ম্যাচে জিতে যায় ভাগ্য পরীক্ষায়। যদিও গায়ানায় তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের শুরুটা আহামরি ছিল না।
পাওয়ার প্লেতে পড়ে যায় ২ উইকেট। রান উঠেছে ৪৪।
এনামুল হক-লিটন দাস দেখে শুনে ব্যাটিং করতে থাকায় ২.৪ ওভার পর্যন্ত ছিল না কোনও বাউন্ডারি। পরে আস্তে আস্তে হাত খুলতে থাকেন দুজন। তবে পঞ্চম ওভারে বেশি আগ্রাসী হতে যাওয়ার মাশুল দেন এনামুল। মিড উইকেটের ওপর দিয়ে মারতে গেলে ওডিন স্মিথের গতিতে পরাস্ত হন তিনি। বল ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়েন আকিল হোসেনের হাতে। দীর্ঘদিন পর ফেরা এনামুল এই ম্যাচেও করতে পারলেন ১০। খেলেছেন ১১ বল।
সাকিব তার পর নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু গত ম্যাচের ছন্দ এই ম্যাচে টেনে আনতে পারলেন না। এনামুলের মতো সাকিবও সফট ডিসমিসালে তালুবন্দি হন মাত্র ৫ রানে।
এর পর ধীরে চলো গতিতে রান তুলেছেন লিটন-আফিফ। এই জুটিতে ১০ ওভারে ২ উইকেটে স্কোর ছিল ৭২। তার পর কিছু বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারিতে সমৃদ্ধ হতে থাকে স্কোরবোর্ড।
এমন সময়ে হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের বলে স্লগ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন আফিফ। ভাগ্য ভালো উইন্ডিজ ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় জীবন পেয়ে যান তিনি। নাহলে ১৫ রানে ফিরতে হতো এই ব্যাটারকে।
লিটন বেশ দূর এগিয়ে নিলেও হাফসেঞ্চুরি থেকে এক রান দূরে থাকতে কপাল পুড়ে তার। হেইডেনের ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে এজ হয়ে জমা পড়েন আকিল হোসেনের হাতে। ৪১ বলে ৪৯ রানে ফেরেন এই ওপেনার। তার দায়িত্বশীল ইনিংসটিতে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছয়। লিটনের বিদায়ে ভেঙে যায় ৪৪ বলে আফিফ-লিটনের করা ৫৭ রানের জুটিও। তবে তার বিদায়ের মুহূর্তেই ১২.৫ ওভারে স্কোর হয়ে যায় ৯৯।
তখন বড় স্কোরের মঞ্চ তৈরি হওয়ায় সেটি এগিয়ে নিতে থাকেন আফিফ-মাহমুদুল্লাহ আফিফ জীবন পেয়ে সুযোগটা ভালো মতোই কাজে লাগিয়েছেন। তুলনায় স্ট্রাইক রেট ভালো ছিল তার। এই সময় তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। যদিও অধিনায়কের ইনিংসটিও টি-টোয়েন্টি সুলভ ছিল না। এলবিডাব্লিউ হওয়ার আগে ২০ বলে ২২ রান করেছেন। তার আগে আফিফ-মাহমুদুল্লাহ জুটি ৩৫ বলে যোগ করেছে ৪৯ রান।
আফিফ তার পরেই দ্বিতীয় হাফসেঞ্চেুরি পূরণ করে রানআউট হয়েছেন। ৩৮ বল খেলে ফেরার আগে করেছেন ৫০। ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়।
শেষ ওভারে মোসাদ্দেক দুটি চার মেরে স্কোরটা নিয়ে যান চ্যালেঞ্জিং একটা জায়গায়। ফলে ৫ উইকেটে রান উঠেছে ১৬৩। মোসাদ্দেক ৬ বলে ১০ রান করেছেন। নুরুল হাসান ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
২৫ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। ১৯ রানে একটি নিয়েছেন রোমারিও শেফার্ড, ৩৪ রানে একটি নেন ওডিন স্মিথও।
এমআই