কোভিড-১৯ জনিত সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ক্লিনিকে চালু হলো ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট। সম্প্রসারিত করোনা ইউনিটের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) ডা. মিল্টন হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সেখানে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, প্রাথমিকভাবে ৫০টি শয্যা নিয়ে বেতার ভবনের করোনা ইউনিটের রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে আরও ৫০টি শয্যা বৃদ্ধি করা হবে। বর্তমান প্রশাসন গত ২৯ মার্চ ২০২১ইং তারিখে দায়িত্ব গ্রহণের পর ইতোমধ্যে ১০০টি শয্যা ও ২০টি কেবিন বৃদ্ধি করেছে। আইসিইউ বেড আরও ১০টি বৃদ্ধি করা হবে। অর্থাৎ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত ১৫০টি করোনা বেড, ১০টি আইসিইউ বেড এবং ২০টি কেবিন বৃদ্ধি করা হবে।
এছাড়া হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, CPAP মেশিন, RT PCR মেশিন বৃদ্ধির কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা হলো বেতার ভবনে চালুকৃত নতুন করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি হবেন এবং তারা চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, যার নাম আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট-এ মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এই ভ্যারিয়েন্টে ৮১ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এতে রোগীদের মৃত্যুহার কম হলেও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। বর্তমানে করোনা মোকাবিলা-ই প্রধান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মাননীয় উপাচার্য বলেন, একই কক্ষে একটানা আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার বেশি অনেক লোক থাকা যাবে না। নিয়মিত গরম পানির গড়গড়া এবং কমপক্ষে দিনে তিনবার গরম পানির ভাপ নিতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, যাদের স্মার্ট ফোন নাই বা স্মার্টফোন ব্যবহারে অক্ষম তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে এসে অন স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনের আগে কোভিড-১৯ জনিত সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, বেতার ভবনে ফলক উন্মোচন করে নতুন করোনা ইউনিট বা সম্প্রসারিত করোনা ইউনিটের উদ্বোধন করেন।
কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান কর্মসূচী শুরু
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এর করোনা টিকা নেয়ার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কনভেনশন সেন্টারের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। আজ ৮ এপ্রিল ২০২১ইং তারিখে সকালে ৯টায় মাননীয় উপাচার্য মহোদয় কোভিড ১৯ এর দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেন। মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের পর পরই টিকা নেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক। এছাড়া কনভেনশন সেন্টারে করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমাজ কল্যাণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদোচ্ছের আলী, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, দুদক চেয়ারম্যান জনাব মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, পিএসসি সদস্য জনাব ফয়েজ আহম্মদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিয়ার রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ, মাননীয় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, মাননীয় বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্যবৃন্দ, সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ, সম্মানিত ডীনবৃন্দও টিকা নিয়েছেন।
টিকা নেয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, একমাত্র কার্যকরভাবে ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমেই করোনার বর্তমান প্রাদুর্ভাবকে থামানো সম্ভব। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। টিকা না নেয়ার কোন বিকল্প নাই। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ১৪ দিন পর থেকে শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয় । এতে করে আক্রান্তের হার ও মৃত্যুর হার উভয়ই হ্রাস পাবে। সমগ্র বিশ্বে টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। এই সময় পর্যন্ত আমাদেরকে অবশ্যই মাস্ক পরাসহ সবধরণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এসকল কর্মসূচীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, শিশু অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. শাহীন আখতার, মেডিক্যাল টেকনোলজি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মোঃ জুলফিকার আহমেদ আমিন, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মোঃ হারিসুল হক, হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান, অতিরিক্ত পরিচালক ডা. নাজমুল করিম মানিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম