নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ, ইতিহাস ও শিল্পকলা বিশারদ এবং বহুগুণে গুণান্বিত কিংবদন্তিতুল্য প্রত্নতাত্ত্বিক ড. এনামুল হকের বিদায় অপূরণীয় ক্ষতি। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাসের একজন নক্ষত্র খসে পড়লো। তিনি আরও কিছুদিন বেঁচে থাকলে জাতীয় জীবনে আরও অবদান রেখে যেতে পারতেন বলে জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বেলা ১১টায় জাতীয় জাদুঘরে ড. এনামুল হকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে এসব কথা বলেন তারা।
এ সময় ড. এনামুল হকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেন, জাতীয় জাদুঘরকে আজকের আধুনিক আদলে নিয়ে আসা ও জনপরিসরে পরিচিত করা সবটুকুই তার হাত ধরে। তিনি একজন কিংবদন্তিতুল্য প্রত্নতত্ত্ববিদ।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশকে না জানলে দেশপ্রেম আসে না। দেশকে ভালবাসতে হবে। শুধু জয় বাংলা বললেই দেশপ্রেম হবে না। অন্তরে ধারণ করতে হবে। এখানেই ছিল এনামুল হকের অবদান। তিনি আমাদের অভ্যন্তরে দেশপ্রেম গড়ে তোলার কাজটি করেছিলেন। এই নক্ষত্র চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে জ্বলুক সেই কামনা করি।
এনামুল হকের কন্যা তৃণা হক বলেন, একেবারে কিশোর বয়স থেকে বাবার ভেতরে দেশপ্রেম ছিল উজ্জ্বল ও পরিপূর্ণ। ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা, বাংলার ঐতিহ্য ও শিল্পকলার নিদর্শন সংগ্রহ করে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা, বাংলা কবিতা ও গীতিনাট্য রচনাসহ সবকিছুর উৎসই গভীর দেশপ্রেম ও চেতনাবোধ।
এর আগে, ঢাকা জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ড. এনামুল হককে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়।
আগামীকাল (শুক্রবার) বগুড়ায় ড. এনামুল হক আর্ট অ্যান্ড কালচারাল একাডেমিতে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৯টায় জানাজা শেষে সাড়ে ১০টায় বগুড়া শহিদ মিনারে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে। পরে তার গ্রামের বাড়ি ভেলুরপাড়াতে ড. এনামুল হক ডিগ্রী কলেজ মাঠে ওইদিন বাদ জুমা সর্বশেষ জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাধিস্থ করা হবে।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অধ্যাপক ড. এনামুল হক ২০১৭ সালে একুশে পদক ও ২০২০ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি ভারতের পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। গত ১০ জুলাই নিজ বাসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সময় জার্নাল/এলআর