শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকাগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করছে

বুধবার, জুলাই ২০, ২০২২
শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকাগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করছে



সময় জার্নাল ডেস্ক: আগের দিনের চেয়ে গতকাল বুধবার উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রাবণের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুতের চাহিদা কমায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা আগের দিনের চেয়ে কমেছে। তবে চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ পাওয়ায় গ্রাম এলাকাগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)।


বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ কমাতে জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের একটি হলো পরিকল্পিত এক ঘণ্টার লোডশেডিং। গতকাল দ্বিতীয় দিনেও লোডশেডিংয়ের রুটিন (সময়সূচি) মানা যায়নি ঢাকার বাইরে।


দিনের বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদনের তথ্য পরের দিন প্রকাশ করে পিডিবি। গত মঙ্গলবার সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে ১১ হাজার ৭৪২ মেগাওয়াট। গতকাল পিডিবির দিনে সর্বোচ্চ চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। আর উৎপাদন ১২ হাজার ৫১ মেগাওয়াট। ২ হাজার ১৪৯ মেগাওয়াট ঘাটতি হতে পারে। এ ঘাটতি পূরণে গড়ে দুই ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করা দরকার পড়ে বলে জানিয়েছেন পিডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে ৯৭৬ মেগাওয়াট সাশ্রয় হয়। বৃষ্টি নামায় চাহিদা পূর্বাভাসের চেয়ে কমেছে। তাই লোডশেডিং কমানো গেছে।

সারা দেশে বিদ্যুৎ বিতরণ করে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ডিপিডিসি ও ডেসকো।গতকাল দুপুরে ঢাকায় দুই ঘণ্টার মতো বৃষ্টি হয়েছে।এতে তাপমাত্রা কমায় বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কমেছে। তাই রুটিন মেনে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দিয়েছে ডিপিডিসি ও ডেসকো। গতকাল দিনে সর্বোচ্চ ১১০ মেগাওয়াট ঘাটতি পেয়েছে ডিপিডিসি। আগের দিন ঘাটতি ছিল ১৫০ মেগাওয়াট। ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, রুটিন মেনেই লোডশেডিং করা গেছে।



তবে ডেসকো এলাকায় আগের দিন ১৫০ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকলেও গতকাল এটি কমে দাঁড়িয়েছে ৯৩ মেগাওয়াটে। দিনে তাদের সাধারণত ১ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা থাকলেও বিকেলের পর থেকে এটি ৯০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে। ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আমির আলী সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টির কারণে চাহিদা কিছুটা কমেছে। বিকেল থেকে তাই আর লোডশেডিং করা হয়নি।


ঢাকাসহ সব শহরের বাইরে দেশের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আরইবি। মোট বিদ্যুতের প্রায় ৫৫ শতাংশই সংস্থাটি বিতরণ করে। সোয়া চার কোটি বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্যে সোয়া তিন কোটির বেশি গ্রাহক আছে সংস্থাটির অধীনে। সারা দেশে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণের কাজটি করে আরইবি।


গত মঙ্গলবার সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করেছে আরইবি। এ সময় তাদের ৮ হাজার ৩৯৬ মেগাওয়াট চাহিদা উঠলেও সরবরাহ পেয়েছে ৬ হাজার ৪৮১ মেগাওয়াট। গতকাল দিনের বেলায় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত ঘাটতি পেয়েছে আরইবি। তবে বিকেলের পর থেকে তাদের ঘাটতি কমে আসে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে আরইবির ঘাটতি ছিল প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট। ঘাটতি বেশি হওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো তাদের প্রচার করা রুটিন মেনে লোডশেডিং দিতে পারছে না।


এ বিষয়ে আরইবির সদস্য (বিতরণ ও পরিচালন) দেবাশীষ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, সমিতিগুলো লোডশেডিংয়ের নিজস্ব রুটিন মানার চেষ্টা করছে। আগের দিনের চেয়ে গতকাল পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিদ্যুতের সরবরাহও বেড়েছে। ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।


আরইবি সূত্র বলছে, রংপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের জেলাগুলোতে এবং ঢাকার আশপাশের সমিতিগুলো একটু নাজুক অবস্থায় পড়েছে। চাহিদার তুলনায় তারা সরবরাহ অনেক কম পাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।


দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা ও উপজেলাগুলোর শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওজোপাডিকো। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে আছে নেসকো। আর শহর ও গ্রাম মিলে দেশের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পিডিবি।



রংপুর বিভাগের আট জেলায় ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ প্রায় অর্ধেক থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিভাগের জেলা শহরগুলোর তুলনায় গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও নাজুক। এ বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ৯৫০ থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট। গতকাল দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে ৫০০ মেগাওয়াট।


গাইবান্ধা জেলার আইনজীবী বেগম হেলালী প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনবার লোডশেডিং হয়েছে। প্রতিবারই এক ঘণ্টার ওপর লোডশেডিং স্থায়ী হচ্ছে।হাসপাতালসহ জরুরি কিছু জায়গায় সব সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নেসকো রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন। তিনি বলেন, বিভাগের আট জেলায় চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে লোডশেডিংয়ের সময়সূচি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।



সময় জার্নাল/এসএম







Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল