নিজস্ব প্রতিনিধি: অনেক আগে থেকেই কৃষক মাটির তৈরি কলস, জালা বা কুলায় বীজ সংরক্ষণ করে আসছিল। আবার কখনো কখনো গোলায় বীজ রাখতেন। এখন ইরি কোকুনে ধান রাখা শুরু করেছেন। এটি ফিলিপাইন, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশে আগে ব্যবহৃত হতো।
কলস, গোলায় এগুলোতে বীজের মান ভালো থাকত না। পোকার আক্রমণও বেশি ছিল। পরে কৃষক বস্তা বা প্লাস্টিকের পাত্রে বীজ রাখা শুরু করেন। কিন্তু এতেও বীজের মান ভালো রাখা সম্ভব হয়নি। ওই পদ্ধতিতে অনেক বস্তা বা পাত্রের প্রয়োজন হতো। ওই ব্যবস্থারই বিকল্প হিসেবে এসেছে ইরি কোকুন।
এটি একটি ব্লাডারের মতো পাত্র, যেটিতে বীজ রাখলে বড় হয়। এটিতে ৪০ থেকে ৫০ মণ বীজ রাখা সম্ভব। এতে বাইরে থেকে বাতাস ঢুকতে পারে না, ফলে বীজে আর্দ্রতার পরিমাণ ঠিক থাকে এবং পোকামাকড়েরও কোনো আক্রমণ হয় না। এটি বাড়ির উঠানে রাখলেও রোদ, বৃষ্টি, খরায় বীজের কোনো গুণগত মান নষ্ট হয় না। এই বীজের অঙ্কুরোদ্গমক্ষমতাও খুব বেশি।
ধানের বীজ সংরক্ষণের জন্য খুলনার ডুমুরিয়ার বারাতিয়া ও শরাফপুর গ্রামের কৃষকেরা এখন ওই ইরি কোকুনে ধান রাখা শুরু করেছেন। ব্যাগের মুখ আটকে রাখলে তার মধ্যে কোনো আর্দ্রতা ঢুকতে পারে না। ফলে সবকিছুই থাকে সতেজ। ব্যাগটির মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ মণ ধান রাখা যায়। এটাই ‘ইরি কোকুন’।
ব্যাগের মুখ আটকে রাখলে তার মধ্যে কোনো আর্দ্রতা ঢুকতে পারে না। ফলে সবকিছুই থাকে সতেজ। ব্যাগটির মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ মণ ধান রাখা যায়। এটাই ‘ইরি কোকুন’।
বেশ বড় আকারের রাবারের একটি ব্যাগ। ওই ব্যাগের মুখ আটকে রাখলে তার মধ্যে কোনো আর্দ্রতা ঢুকতে পারে না। ফলে সবকিছুই থাকে সতেজ। ব্যাগটির মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ মণ ধান রাখা যায়। এটাকেই বলা হয় ‘ইরি কোকুন’।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ইরি কোকুন হলো বাংলাদেশে ব্যবহৃত বীজ সংরক্ষণে কৃষির সর্বশেষ প্রযুক্তি।
বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চলমান জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রোগ্রাম ফেস-২ (এনএটিপি) প্রকল্পের আওতায় এটি বাংলাদেশে এনে কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ডুমুরিয়া, দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় দুটি করে ইরি কোকুন দেওয়া হয়েছে। কৃষক গ্রুপের মধ্যে দেওয়া এই ইরি কোকুন ওই এলাকার সব কৃষকই ব্যবহার করতে পারবেন।
ইরি কোকুনের মধ্যে ধান রাখলে কোনো অবস্থাতেই ওই ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। শুধু তা-ই নয়, ওই ইরি কোকুন ইঁদুরেও কাটতে পারে না। ফলে নিরাপদে ধান রাখা যাবে। আস্তে আস্তে কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এটি।
সময় জার্নাল/এলআর