শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুকও শক্তিশালী গণমাধ্যম

শনিবার, এপ্রিল ১০, ২০২১
ফেসবুকও শক্তিশালী গণমাধ্যম

অ আ আবীর আকাশ : প্রশ্ন তুলতে পারি- 'বর্তমান সময়ের যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বিকাশে কোন মাধ্যম সবচেয়ে এগিয়ে ও সহজতরো?'

যোগাযোগ মাধ্যমের ক্রমবিবর্তনের ফলে আধুনিক সভ্যতা ও কম্পিউটার যুগের এ প্রযুক্তির সময়ে বিবর্তনশীল পরিপ্রেক্ষিত (Evolutionary perspective) ফেসবুক হয়ে উঠেছে শক্তিশালী মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে টুইটার, ইনস্টাগ্রাম। তৃতীয় স্থান ছেপে আছে লিংকডইন।

ফেসবুক মানুষের এতো কাছে এসে পৌঁছেছে যে, প্রতিটি স্মার্টফোনে এই অ্যাপসটি মোবাইল কোম্পানি থেকেই ইন্সটল করা থাকে। যা দেশের জনসাধারণের জন্য হয়ে উঠেছে যোগাযোগ ব্যবস্থার শক্তিমান মাধ্যম। সমাজের কিছু সচেতন নাগরিক টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করছেন। ঢালাওভাবে এই ফেসবুক ছাড়া অন্যন্যা অ্যাপস ব্যবহারে সিদ্ধ হতে পারেনি জনগণ।

প্রথম আলো পত্রিকায় আজকে কোন নিউজগুলো প্রাধান্য পেয়েছে বা শিরোনাম হয়ে এসেছে তা যেমন যুগান্তর পত্রিকা পাঠকের জানার সুযোগ নেই তেমনি চ্যানেল আই (channel-i) দেখা দর্শক জানতে পারেনা বাংলাভিশন টিভিতে (bangla vision) কি প্রচার হচ্ছে! কিন্তু ফেসবুক এমন একটি মাধ্যম যেখানে সকল টিভি চ্যানেল পত্রিকা থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমগুলোকে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পাঠক বা দর্শকের সামনে হাজির করছে। ফেসবুকের সাধারণ পদ্ধতিতে পাঁচ হাজার (5000) ফ্রেন্ড (friend) সংযুক্ত থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে লাখ লাখ ফ্রেন্ড (friend) সংযুক্ত হওয়ার পদ্ধতি ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে রয়েছে। 

একটা পত্রিকার সার্কুলেশন সংখ্যা যদি ৫ লাখ হয় তাহলে পাঠক সংখ্যা দ্বীগুণ যোগ করলে ১০ লাখ ধরা যায়। টিভি চ্যানেলের দর্শক সংখ্যা ১০ লাখ ধরলে ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে ফ্রেন্ড সংযুক্তির সংখ্যা ২০ লাখ, ৩০ লাখ। এমনও ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে যেখানে ফ্রেন্ডের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

পুঁজিবাদী গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় না বা কোনো সুযোগ নেই সেই অনুষঙ্গটিও কোনো সাধারন ফেসবুক ব্যবহারকারীর বদৌলতে খবরের মতো করে পাঠকের সামনে হাজির করে ফেসবুক। এর বাহিরেও যেকোনো খবর, টিকা, উক্তি, ছবি কিংবা সাধারণ দৃশ্য, ভালোলাগা মুহূর্তেই দেশে-বিদেশে ভাইরাল হয়ে যায় এ ফেসবুকের কল্যানে। 

একজন সাধারন পাঠক তার মনের অভিব্যক্তি যেমন করে হাজার হাজার মানুষের সাথে শেয়ার করতে পারেন তেমনি অন্যদের মনের বাসনাগুলো জানতে পারেন। মোটকথা সকল টিভি চ্যানেল, পত্রিকা বা দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ নানা সঙ্গতি-অসঙ্গতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, সাহিত্য, স্বাস্থ্য, বিনোদন, ভালোলাগা-মন্দলাগা, সফলতা, উন্নয়ন, বিজ্ঞান,এমনকি বিজ্ঞাপনসহ আরো নানা ষঙ্গ-অনুষঙ্গগুলোকে একত্র করে পরপর পাঠকের সামনে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করার প্রক্রিয়ার নাম ফেসবুক। ফেসবুক প্লাটফর্মে যত সহজে সবকিছু জানা ও জানানো যায় এর চেয়ে সহজ মাধ্যম দ্বিতীয়টি নেই। এর কারণ হলো ফেসবুক প্রতিটি স্মার্টফোনে থাকার সুবাদে একজন নিরক্ষর মানুষও তা চালনায় পারদর্শী হয়ে উঠেন। 

পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল দেখার সময় ও সুযোগ দুটোই এখন সাধারণ জনগণের নেই। জনগণ দেশ বিদেশের খবরা-খবরের জন্য ফেসবুকের উপর নির্ভর করছেন। চলার পথে একটু সুযোগ পেলেই ফেসবুকে ঢুঁ মেরে নিজেকে আপডেট রাখতে চান খোদ গণমাধ্যমের মালিক নিজেই।

কোনো ব্যক্তির মনগড়া প্রকাশিত উক্তি ফেসবুককে খাটো করে দেয়া না দেয়ার কোন কারণ নেই। সারা পৃথিবীর মানুষকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে আসার জন্য এর চেয়ে শক্তিশালী গণমাধ্যম আর কি হতে পারে? তবে এর অপব্যবহার ব্যক্তিকেই দায়ী করে, এর অন্যথা কিছু নয়।

পুঁজিবাদী গণমাধ্যমব্যবসায়ীদের ব্যবসায় বিরাট ধাক্কা এই ফেসবুক। যে বা যিনি একে গণমাধ্যম বলে ভাবতে পারেন না তিনি নিজেও কয়েক মিনিট পর পর ফেসবুকে উঁকি মারেন। যিনি এর স্বীকৃতি দিতে নারাজ তিনিও তাঁর চ্যানেল বা পত্রিকার খবর ফেসবুকে প্রকাশ করেন। দেশি-বিদেশি এমন কোনো গণমাধ্যম নেই যেটি ফেসবুকে আসে না। শুধুমাত্র পুঁজিবাদী হিসেব কষে গণমাধ্যম মালিকরা একে গণমাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নারাজ।

প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল এই লেখকের সাথে তারই অফিসে একান্ত আলাপচারিতায় বলেন-'ফেসবুক হলো পৃথিবীর সেরা গণমাধ্যম। শুধুমাত্র একে পুঁজিবাদী গণমাধ্যম ব্যবসায়ীরা মানতে নারাজ। না হয় ফেসবুক চালানোর উপর প্রশিক্ষণ দিতে পারতাম। কারণ প্রতিটি স্মার্টফোনে ছবি এডিট, ভিডিও এডিট করা যায়। লেখাগুলোকে সামঞ্জস্যপূর্ণতার ভেতরে লিখলে, ভাষা ও শব্দ গঠনে চতুর দৃষ্টি রাখলে, অন্ধকার ছবিগুলো ক্লিয়ার করে দিলে, কতো সুন্দর চমৎকার পঠন যোগ্য হয়ে উঠে লেখাটি। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।'

তাহলে ফেসবুক যে কত শক্তিশালী তা বোঝার অবকাশ রইল না।

লেখকঃ কবি প্রাবন্ধিক কলামিস্ট ও সাংবাদিক। 

সময় জার্নাল/এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল