মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা শহরতলীর কাশেমপুর এলাকায় দিন দুপুরে ঘরে ঢুকে নিজের বন্ধুকে ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে ঘাতক সাগর হোসেন।
শনিবার বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হত্যার পর ঘাতক সাগর হোসেন তার বাবাকে এ খবর জানায় এবং নিহত বন্ধু সালাউদ্দিনের লাশ বের করে আনার জন্য বলে। পুলিশ হত্যাকারিকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহতের নাম সালাহউদ্দীন আহমেদ (১৪)। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর মালিপাড়া গ্রামের শাহজান আলী ওরফে বাবু সরদারের ছেলে।
এদিকে হত্যাকরি সাগর হোসেন (১৫)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকালে শহরে রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাগর হোসেন সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে।
নিহত সালাউদ্দিনের বাবা শাহজাহান আলীর বরাত দিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানারওসি (তদন্ত) মোঃ বুরহান উদ্দিন জানান, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সাগর হোসেন তার বন্ধু ইজিবাইক চালক সালাউদ্দিন আহমেদের ঘরে ঢোকে। এক পর্যায়ে সে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। এরপর সে তাদের বাড়িতে যেয়ে তার
বাবা শহিদুল ইসলামকে এ খবর জানায়। নিহত সালাউদ্দিন বাড়ির একটি কক্ষে একাই থাকতো।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত সালাউদ্দিন ও তার ঘাতক বন্ধু সাগর হোসেন দুজনেই ছিল মাদকাসক্ত। তারা মাদক কারবারের সাথেও জড়িত ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপরদিকে একটি ইজিবাইক বেচাকেনা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর কোন একটি কারনে এই হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারনা। খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌছেছেন পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
ময়না তদন্তের জন্য নিহত সালাউদ্দিনের লাশ সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সালাউদ্দীনকে রাতে সাগর হোসেনই ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে, এমন অভিযোগ করে তার বিচার দাবী করে নিহতের বোন রীতামনি বলেন, সব সময় একসাথে ঘুরত সাগর ও সালাউদ্দীন। গতকাল রাতে তারা দু’জন
একই কক্ষে ছিলো। প্রতিবেশি অনেকেই তা দেখেছে। দুপুরে পুলিশ যখন তার ভাই সালাউদ্দীনের মরদেহ উদ্ধার করে,তখন বাইরে থেকে তালা মারা ছিল। সুতরাং এই খুন সাগরই করেছে।
তবে এলাকার অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সাগর ও সালাউদ্দীন মাদক চোরাচালান ও সেবনের সাথে জড়িত। তাদের নেতৃত্বে এলাকায় একটা কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। যারা বিভিন্ন সময় অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে বেড়ায়।
এছাড়া সালাউদ্দীনের বাবা বাবু সরদারও চিহিৃত একজন মাদক ব্যবসায়ী। মাদক চোরাচালানের ভাগ-বাটোয়ারা সংক্রান্ত বিরোধে এমন হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা এলাকাবাসির।
সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শামসুল হক শামস ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিহত সালাউদ্দীনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। তাকে গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া
গেছে। পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করেছে। পুলিশ হত্যাকারি সাগর হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। বিকাল ৫টার দিকে শহরের রসুলপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিটি কলেজ এলাকায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠার বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ওই এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে বলে শোনা যাচ্ছে। সালাউদ্দীন হত্যাকান্ডে বিষয়টি সামনে এসেছে। বিষয়টি পুলিশের মাথায় রয়েছে।
সময় জার্নাল/এমআই