সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাল ডেস্ক: পরমাণু কেন্দ্র ব্যবহার করে রাশিয়া রকেট হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। দেশটির অভিযোগ, একটি দখলকৃত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবহার করে চালানো রুশ এই হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন।এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দখলকৃত একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারপাশে থেকে রাশিয়ার নিক্ষেপ করা রকেটে কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। মূলত ইউক্রেনের পক্ষে সেখানে পাল্টা হামলা চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হবে জেনেই রাশিয়া সেটি ব্যবহার করছে।
রুশ হামলার শিকার ওই ইউক্রেনীয় শহরের নাম মারহানেটস। তবে মস্কো বলছে, তাদের হামলার আগে শত্রুরা জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ান সৈন্যদের ওপর হামলা চালাতে এই শহরটি ব্যবহার করেছে। গত মার্চের শুরুতে যুদ্ধের প্রথম দিকেই রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দখলে নেয়।
বুধবার ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের বাহিনী মারহানেটস শহরে হামলার জবাব দেবে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া কয়লা-খনির শহর ভুলেদারসহ জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের আরও কয়েকটি এলাকায় বোমাবর্ষণ করেছে।
পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে ডিনিপ্রো নদীর ওপারে মারহানেটস শহরের কাছে ইউক্রেনীয়-নিয়ন্ত্রিত শহর নিকোপোলের মেয়র টেলিগ্রামে বলেছেন, রাশিয়ার সেনাদের গোলা গত সপ্তাহে প্রায় রাতেই কাছাকাছি একটি আবাসিক এলাকায় আঘাত করেছে।
আর তাই আরও শক্তিশালী অস্ত্র পাঠানোর জন্য বিদেশি মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বুধবার গভীর রাতের ভিডিও ভাষণে বলেন, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে রাশিয়া আজ যে হামলা চালিয়েছে তার জবাব দেবে কিয়েভ।
তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় এবং দেশটির মিত্রদের অবশ্যই ‘যুদ্ধকে সংক্ষিপ্ত করার জন্য দখলদারদের সর্বোচ্চ সম্ভাব্য ক্ষতি কিভাবে করা যায়’ তা নিয়ে ভাবতে হবে।যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই ঘোষণার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।এরপর গত মার্চের শুরুতে যুদ্ধের প্রথম দিকেই রাশিয়ার সামরিক বাহিনী জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয়। যদিও এই স্থাপনা এখনও ইউক্রেনীয় প্রকৌশলীরা পরিচালনা করছেন। এরপর চলতি আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে আবারও হামলার ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ এই হামলার জন্য ইউক্রেন রাশিয়াকে দায়ী করলেও বিবিসি বলছে, হামলার দায় পাল্টা ইউক্রেনের ঘাড়েও চাপিয়েছে রাশিয়া। দিন দু’য়েক আগে কিয়েভ জানায়, জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রোববার গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। পারমাণবিক এই সহিংসতার দায়ে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানায় ইউক্রেন।
অন্যদিকে জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টে হামলার পর জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি পর্যবেক্ষণ সংস্থা সম্ভাব্য পারমাণবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পর স্থাপনাটি ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করতে বুধবার রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নেতৃস্থানীয় শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট গ্রুপ অব সেভেন।অবশ্য ইউক্রেনের মারহানেটস শহরে হামলার অভিযোগের বিষয়ে রাশিয়া এখনও কোনো মন্তব্য করেনি এবং শহরটিতে রুশ হামলায় হতাহতের বিষয়ে ইউক্রেওনর দাবিও স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
তবে মস্কো বলছে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা করে না।এর আগে ইউক্রেনেরেএই জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে রাশিয়া সেনা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছিল কিয়েভ। দেশটির পারমাণবিক শক্তি কোম্পানির প্রধান দিন দু’য়েক আগে বলেন, জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে সেনা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া।তার অভিযোগ, ইউক্রেনের অবস্থানের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য এই স্থাপনাটিকে একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছে দখলকারী রাশিয়ান বাহিনী।
এসএম
এ বিভাগের আরো
মধ্যপ্রাচ্য সংকট
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল