মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতীয় পতাকা অবমাননা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বেরোবির ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তারা

বুধবার, আগস্ট ১০, ২০২২
জাতীয় পতাকা অবমাননা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বেরোবির ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তারা

রবিউল হাসান সাকীব, বেরোবি প্রতিনিধিঃ

জাতীয় পতাকা অবমাননা করার মতো কোনো প্রমাণ না থাকায় এ বিষয়ে দায়ের করা মামলা থেকে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অব্যহতি প্রদান করেছেন রংপুর জজকোর্ট।

গত ২৫ জুলাই রংপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ মোঃ তারিখ হোসেন ওই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গঠিত চার্জ বাতিল করে মামলা হতে অব্যহতি প্রদান করেন। গত রবিবার প্রকাশিত উক্ত রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর বিভিন্ন বিভাগের কিছু সংখ্যক শিক্ষক-কর্মকর্তা জাতীয় পতাকা সদৃশ ব্যানার হাতে স্বাধীনতা স্মারক চত্ত্বরে ছবি তোলেন। উক্ত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর, ২০h২০ তারিখে রংপুর মহানগরীর তাজহাট থানায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মাহামুদুল হক, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মশিউর রহমান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম জিডি করেন। এরপর রংপুর মেন্ট্রোপলিটন আদালত-৩ এটি এনজিআর মামলা হিসেবে রেকর্ড করে এবং গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে বিভিন্ন বিভাগের ১৮ জন শিক্ষক ও এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।

উক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তারা হলেন, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মোরশেদ হোসেন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মণ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান ও প্রভাষক মোঃ রহমতুল্লাহ, ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ নুর আলম সিদ্দিক, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ ছদরুল ইসলাম সরকার, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ কুমার সরকার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান ও প্রভাষক আবু সায়েদ, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজামান, ড. মোঃ রশীদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক চালর্স ডারউইন ও কর্মকর্তা শুভংকর চন্দ্র সরকার, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাসুদ-উল-হাসান, ইতিহাস ও প্রত্বতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাত আলী, রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মোস্তফা কাইউম শারাফাত, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাম প্রসাদ বর্মণ এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রভাষক মোঃ শামীম হোসেন। বিচারিক আদালতের গঠন করা উক্ত চার্জকে চ্যালেঞ্জ করে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তার পক্ষ থেকে রংপুর জজকোর্টে রিভিশন মামলা দায়ের করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্র উক্ত ফৌজাদারী মামলার বাদী হলেও বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মাহামুদুল হক এবং গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান মামলায় পক্ষ হওয়ার জন্য আবেদন করেন। রংপুর জেলা জজ তাঁদের আবেদন নামঞ্জুর করলে তাঁরা এবিষয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন এবং সেখানেও পরপর দুটি বেঞ্চ তাদের আবেদন না মঞ্জুর করে। এর ফলে দীর্ঘদিন রিভিশন মামলার শুনানী ব্যাহত হয়। এরপর গত ২৫ জুলাই  তারিখে দীর্ঘ শুনানী শেষে বিচারিক আদালতের চার্জশীট বাতিল করে মামলা থেকে আসামীদের অব্যহতি দিয়েছেন রংপুর জজকোর্টের ২য় আদালতের জজ মোঃ তারিখ হোসেন।

উক্ত রায়ে জজ উল্লেখ করেন, মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামীগণ ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় পতাকা অবমাননা করেন নি। তারা ব্যানার আকারে জাতীয় পতাকার অনুরূপ ব্যানার ব্যবহার করেছিলেন। তারা সরাসরি বিকৃত করে জাতীয় পতাকা কোন অফিস বা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করেন নি। এছাড়াও আসামীগণকে স্বাধীনতাবিরোধী দলের সমর্থক মর্মে জিডিতে উল্লেখ করা হলেও প্রসিকিউশন রিপোর্টে তা পাওয়া যায় না। বরং অনুমান করা হয় আসামীদের সকলেই সরকার দলীয় (স্বাধীনতার পক্ষের) শিক্ষক দলের সমর্থক। কাজেই তারা ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় পতাকা অবমাননা করেছেন বলে বিশ্বাস করা যায় না। এছাড়াও আসামীগণের ফেসবুকে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন যে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় পতাকা অবমাননা করেন নি।

বিচারক তার রায়ে আরো বলেন, ফৌজদারী অপরাধের প্রাথমিক ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে মিনস রিয়া (আসল উদ্দেশ্য), কিন্তু আসামীদের ফেসবুক স্ট্যাটাস ও পরবর্তী আচরণ হতে প্রতীয়মান হয় যে, জাতীয় পতাকা অবমাননা করার ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ে তারা জাতীয় পতাকা নয় বরং ব্যানারে জাতীয় পতাকার অনুরূপ আকৃতি ব্যবহার করেছিলেন।

এবিষয়ে, আসামীপক্ষের আইনজীবী রংপুর জজকোর্টের সিনিয়র এডভোকেট জহিরুল হক জানান, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় পতাকা অবমাননা করেন নি। এখন আদালতের রায়ে তারা সন্তুষ্ট।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল