মাহমুদুল হাসান, কুবি : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের চূড়ান্ত পরীক্ষার উত্তরপত্র হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। ঘটনাটি তদন্তে কমিটিও গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অথচ, কমিটি গঠনের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও শেষ হয়নি তদন্ত কার্যক্রম। ফলে ফলাফল আটকে থাকায় দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে ওই সেশনের শিক্ষার্থীদের।
২০২০ সালের ১ মার্চ শেষ হয়েছিলো এই কোর্সের পরীক্ষা। ২০২১ সালের এপ্রিলে এসে উত্তরপত্র না পাওয়া ও এই ঘটনার কোনো সুরাহা না হওয়ায় হতাশ ওই কোর্সের পরীক্ষায় বসা শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘উত্তরপত্র কিভাবে হারিয়ে যায় এটা আমি ভেবে পাই না। দুশ্চিন্তায় আছি। এমনিতেই করোনায় অনেক পিছিয়ে গেছি। এখন আমরা আরেক সমস্যায় পড়লাম।’
এদিকে উত্তরপত্র হারানোর ঘটনা সামনে আসার প্রায় দুই মাস পরও তদন্তকাজে অগ্রগতি না হওয়ার পেছনে লকডাউনকে দায়ী করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তদন্ত কার্যক্রম আটকে যাওয়ার ব্যাপারে করছেন কমিটির আহবায়ক ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, 'তদন্ত কার্যক্রম চলছে৷ ইতোমধ্যে আমি মিটিং করেছি, এই ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি, বেশ কিছু জায়গায় খোঁজ-খবরও নিয়েছি। এখন আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, ঐ বিভাগে খোঁজা দরকার। এরপর আমি পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য পদক্ষেপ নিতে পারবো৷ কিন্তু এর মধ্যে তো লকডাউন শুরু হয়ে গেলো!'
কবে নাগাদ এই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যেতে পারে এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'এই লকডাউনে কোনো শিক্ষক আসতে না চাইলে তো তাকে আমরা জোর করে ক্যাম্পাসে আনতে পারি না। তবে লকডাউন শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা দুই একটা মিটিংয়ের মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারবো।'
এসময় রেজিস্ট্রার দফতর থেকে চিঠি আসতে দেরি হওয়ায় তদন্ত কমিটির কার্যক্রমও দেরিতে শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের এই অভিযোগের ব্যাপারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘খাতা হারানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত হয়৷ তবে এ সিদ্ধান্ত যতক্ষণ পর্যন্ত সিন্ডিকেটে অনুমোদন না পাবে ততক্ষণ পর্যন্ত চিঠি দেওয়া যায় না। আর একাডেমিক কাউন্সিল হয়েছে সিন্ডিকেটের প্রায় ১৫-২০ দিন আগে৷ তাই এখানে ১৫-২০ দিন দেরি হয়ে গেছে।’
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরী তদন্ত কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, ‘এখন তো লকডাউন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। তবে আমরা ইতোমধ্যে দুটো মিটিং করেছি। আমাদের প্রাথমিক কাজ শেষ। লকডাউন শেষে বাকিটা দেখা যাবে।’
এদিকে বিষয়টি তদন্তাধীন উল্লেখ করে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি গণিত বিভাগের প্রধান খলিফা মোহাম্মদ হেলাল।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ‘এমটিএইচ-২২১: রিয়েল এনালিসিস-২’ নামক কোর্সের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। যে কোর্সের শিক্ষক ছিলেন প্রভাষক মো. আতিকুর রহমান।
সময় জার্নাল/এমআই