সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

আমাদের গন্তব্য কোন দিকে?

শুক্রবার, আগস্ট ২৬, ২০২২
আমাদের গন্তব্য কোন দিকে?

ডাঃ রোকনুজ্জামান:

ক্ষমতা হারাচ্ছে সমাজ এবং পারিবারিক শাসন ;আমাদের গন্তব্য কোন দিকে? ইদানীং একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছে।
কোনো অঘটন ঘটলেই হয় পিতামাতা, নইলে শিক্ষককে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলে দিচ্ছে কিছু ফেসবুক বুদ্ধিজীবী!
এদের কথাবার্তা শুনলে মনে হবে  পিতামাতা কিংবা শিক্ষকের চেয়ে তারাই সন্তানের সবচেয়ে বেশী আপনজন, চরম হিতাকাঙ্খী।
কিছুদিন  আগে এক মেয়ে বহুতল ভবন থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করলো। রেখে গেল একখানা চিরকুট। যাতে আব্বা মা, ভাইকে  প্রকাশের অযোগ্য ভাষায় গালাগালি।
তাদের অপরাধ কী? 
-তারা তাকে তার ইচ্ছামাফিক জীবনযাপন করতে দেয়নি। 
সে ইচ্ছেমতো ঘুরবে, ফিরবে, বন্ধুবান্ধব নিয়ে চলাচল করবে, ইচ্ছে হলে ঘরে ফিরবে, ইচ্ছে হলে বাইরে থাকবে .......তো যেহেতু বাবা মা তাকে সেই বেলেল্লাপনার সুযোগ দেয়নি কিংবা আটকাতে চেয়েছে অতএব ইচ্ছামতো গালাগালি করে শেষ বিদায় নিয়ে ফেলো। 
এরপরই দেখলাম কিছু ফেবু বোদ্ধার মায়াকান্না ; ওকে যেন নিষ্কলুষ সার্টিফিকেট দেয়া হয় এবং বাবা মাকে যেন অবশ্যই শূলে চড়ানো হয়! 
নিকট অতীতের এধরনের বেশ কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনার কাহিনী প্রায় একই ধরনের।
ছেলেমেয়েগুলো আত্মহত্যা করার আগে পিতামাতা এবং শিক্ষকদের সমাজের চোখে দোষী করে রেখে যাচ্ছে।এবং অনেকেই ওই চিরকুটের সূত্র ধরে অভিভাবকদের মিডিয়া ট্রায়ালে ফেলে "অপরাধী " বানিয়ে ছাড়ছে। 
এবং যারা পরিবারের এই শাসনকে চোখ বন্ধ করে আসামী করে ফেলছে তাদের খুবই কমন একটা টেনডেন্সি হলো, ছেলে মেয়েদেরকে একটা বয়সের পরে নির্বিচার স্বাধীনতা দিয়ে দিতে হবে।
অপসংস্কৃতি, নস্টামি, জেনা ব্যাভিচার, মদ মাদকতা, উদ্দম উচ্ছৃঙ্খল জীবনাচার,,,,,, সবকিছুকেই অবাধ স্বাধীনতা দিতে হবে। 
কিন্তু আটকে ফেলতে হবে ধর্মীয় মুল্যবোধ, সোস্যাল ভ্যালু, মোরালিটি, পারিবারিক শাসন, সামাজিক দায়বদ্ধতা। 
গত দুই যুগে আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা খুবই দ্রুত পরিবর্তিত হয়েছে। আমরা একটা সমাজবদ্ধ জীবন থেকে ব্যাক্তিস্বাতন্ত্রবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছি।
এতে বেশ বড় ভুমিকা রেখেছে অবাধ আকাশ সংস্কৃতি , ইন্টারনেট এবং সামাজিক  যোগাযোগ মাধ্যমের সহজলভ্যতা। 
উন্মুক্ত তথ্যের অবাধ ব্যাবহারে জ্ঞান বিজ্ঞানের সহজলভ্যতার সাথে সাথে আমাদেরকে গ্রাস করেছে অপসংস্কৃতি, নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা, ভোগবাদ।
যার পরিনতি আজকের  সমাজের দ্রুত  ডিমোরালাইজেশন, অপরাধ এবং আত্মহত্যাপ্রবনতা। 
অথচ আমরা কখনোই ভেবে দেখিনি এগুলোর নিয়ন্ত্রণ আসলে কাদের হাতে!
আমি জানি অপসংস্কৃতি, নির্লজ্জতা, ব্যাভিচার, ভোগবাদ - এইসব শব্দের ব্যাবহার নিয়ে অনেকেরই আপত্তি আছে। এগুলোর  মিনিং একেকজনের কাছে একেকরকম। 
আপনি কাকে জিনা ব্যাভিচার, অপসংস্কৃতি, নির্লজ্জতা বলবেন, সেটা নির্ভর করে আপনি কোথা থেকে আপনার মোরালিটির সবক পেয়েছেন তার ওপর।
একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের  সোর্স তো  একটাই। 
আমরা অলরেডি  সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাকে  ঢিল করে দিয়েছি।
হয়তো খুব দ্রুতই পিতামাতার শাসনের হাতকেও রাস্ট্রীয় আইনে বেধে ফেলব।
কিন্তু আমাদের বোঝা প্রয়োজন ক্ষমতা কিংবা শাসনের দন্ড কখনোই ধ্বংস হয়না ; এটা শুধু এক হাত থেকে আরেক হাতে যায়।
আমাদের  শাসনের দন্ড আমাদের হাত ছেড়ে  কার হাতে চলে যাচ্ছে, এটা কি কেউ  বুঝতে পারছেন ?  
সাদা চোখে সেই দন্ড হয়তো রাস্ট্রের হাতেই যাচ্ছে। আসলেই কি তাই?
আমাদের পারিবারিক এবং সামাজিক শাসনে রাস্ট্রের হাত কতটুকু প্রসারিত হওয়া উচিত? 
সেই হাত আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য  কতটুকু নিরাপদ?


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল