শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

জ্বালানির দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৫ টাকা কমানোই, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার উৎকৃষ্ট উদাহরণ

মঙ্গলবার, আগস্ট ৩০, ২০২২
জ্বালানির দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৫ টাকা কমানোই, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার উৎকৃষ্ট উদাহরণ

নিজস্ব প্রতিনিধি: বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম ৩৪ থেকে ৪৪ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে ৫ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

মঙ্গলবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ইআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শারমিন রিনভী। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, হঠাৎ করে রাতে তেলের দাম লিটারে ৪৫ টাকা বৃদ্ধি, আবার ৫ টাকা কমানোর ঘোষণা, এটা হঠকারিতা। এক সচিব ও এক মন্ত্রীর মাধ্যমে হঠাৎ করে এ ঘোষণা। দক্ষতার অভাবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত দেয়া হচ্ছে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত কি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, মন্ত্রিসভা না সংসদীয় কমিটির? কেউ কি নির্দিষ্ট করে বলতে পারবে? জবাবদিহিতার জায়গা দুর্বল হয়ে গেছে। নীতির বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে হবে। কারণ বাজার খারাপ জিনিস। বাজারের যা অবস্থা তাতে সরকারের এখনই সিরিয়াসলি সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। স্বল্পকালীন ও মধ্যমেয়াদী পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মূল সমস্যা বৈদেশিক লেনদেনে নয়। মূল সমস্যা আর্থিক খাতের দূর্বলতা।

প্রয়োজনীয় রাজস্ব সংগ্রহ না হওয়া। যে কারণে জ্বালানিতে ভর্তূকি, দরিদ্র্যদের খাদ্য সহায়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, দেশে প্রতিযোগিতাপূর্ণ ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না। বিশেষ জায়গা থেকে বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এতে মেধাভিত্তিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ব্যক্তি বিনিয়োগ বিকশিত হচ্ছে না। এর ফলে ক্ষতি হচ্ছে সরকার, মানুষ ও দেশের। বিদ্যুৎ জ্বালানিতে প্রতিযোগিতার সুযোগ তুলে নেয়া হয়েছে। বিচারের সুযোগও তুলে নেয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি সংকটে নেই, তবে চাপে আছে। তবে সামষ্টিক অর্থনীতিতে এখন যে অস্থিরতা চলছে, তা সহসাই কাটবে না। ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থাকবে। যারা বলছেন শিগগিরই সংকট কেটে যাবে, তারা চটজলদি রাজনৈতিক চিন্তা থেকে আশস্ত করার চেষ্টা করছেন। এতে বাজারে অস্থিতিশীলতা ও আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পদ্মা সেতু হবে না এ কথা কেউ বলেনি। অর্থ নিয়ে কথা বলা হয়েছিল। অর্থ ছাড়ে বড় ঝুঁকি নিয়ে কথা বলা হয়েছিল। পদ্মা ব্রিজ নিয়ে কোনো বিরোধিতা ছিল না। কারণ এটা পাকিস্তান আমল থেকেই সবার দাবি ছিল। অর্থনীতিবিদরা বিরোধিতা করেছে এটা অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু নয়।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, সরকার রাজনৈতিক ঘাটতি ঢাকতে দৃশ্যমান প্রকল্প হাতে নেয়। গত কয়েক বছরে সরকারের পক্ষ থেকে ভৌত অবকাঠামোতে যে পরিমাণ ব্যয় করা হয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সে পরিমাণ মনোযোগ দেয়া হয়নি। ২০টি মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের পর তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হলে আমাদের দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। আর এজন্য আমাদের শিক্ষা খাতের যেমন প্রয়োজন রয়েছে তেমনি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে স্বাস্থ্য খাতের।

দেবপ্রিয় বলেন, সরকার ভৌত অবকাঠামো যে পরিমাণ বিনিয়োগ করছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সেই বরাদ্দ থাকছে না। ২০টি মেগা প্রকল্পের জন্য জিডিপির ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। অথচ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকছে জিডিপির এক শতাংশ। শিক্ষাতেও সমপরিমাণ। রাজনৈতিক শক্তি বৈধতার জন্য খুব দ্রুততার সাথে দৃশ্যমান ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করতে চাচ্ছে। রাজনৈতিক ঘাটতি পুরনের চেষ্টা হচ্ছে। কারণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগের ফলাফল আসতে দশকের বেশি সময় লাগে। রাজনৈতিক চক্রে এই সময় নেই।

পাশাপাশি সরকারের রাজনৈতিক দর্শনের কারণে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বৈষম্য হচ্ছে। করোনার সময় সহায়তা বিতরণে বড় ধরনের বৈষম্য দেখা দিয়েছে। যার যা প্রাপ্য তা নথিভুক্ত হয়নি। ফলে প্রমানিত হয়েছে সরকারের সেবা পাওয়ায় দূর্বল নাগরিকদের অভিগমন সহজ নয়।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল